সাবেক এমপিদের ৫ ল্যান্ড ক্রুজার কিনতে চায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
বাংলাদেশ

সাবেক এমপিদের ৫ ল্যান্ড ক্রুজার কিনতে চায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা অর্ধ শতাধিক গাড়ির মধ্যে পাঁচটি ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের গাড়ি কিনতে চাইছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এসব গাড়ি কেনার অনুমোদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নির্ধারিত রিজার্ভ ভ্যালু অনুযায়ী প্রতিটি গাড়ি ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টাকায় কিনতে চাইছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রথম নিলামে সাবেক সংসদ সদস্যদের ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির কাঙ্ক্ষিত দাম পায়নি। এ কারণে একটি গাড়িও বিক্রি হয়নি। এখন দ্বিতীয় নিলামে নতুন করে আরও ৬টি যুক্ত করে মোট ৩০টি গাড়ি নিলামে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে, বন্দরের কার শেডে গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে পড়ে থাকা সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়ি কিনে নিয়ে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি। পাঁচটি গাড়ি কেনার অনুমতি চেয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে গত ৫ মার্চ চিঠি পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক সই করা ওই চিঠিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের যানবাহন সংকটের তথ্য তুলে ধরেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলোর মধ্যে পাঁচটি বন্দর কর্মকর্তাদের ব্যবহারে কেনার জন্য অনুমোদন চেয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির জবাব আসেনি। আমরা কাস্টমসের রিজার্ভ ভ্যালু অনুযায়ী এসব গাড়ি কিনতে চাইছি। অথচ প্রথম নিলামে একটি গাড়িরও রিজার্ভ ভ্যালুর অর্ধেক দাম উঠেনি।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ রিজার্ভ ভ্যালু অনুযায়ী সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা পাঁচটি গাড়ি কিনতে চাইছে। এতে রাজস্ব বাড়বে। কেননা প্রতিটি গাড়ির রিজার্ভ ভ্যালু নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টাকা করে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই দামে গাড়ি কিনতে চাইছে। প্রথম নিলামে এসব গাড়ির সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম উঠেছে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।’ 

বন্দরের কার শেডে সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে পড়ে আছে এসব গাড়ি

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা সাবেক এমপিদের ২৪টি গাড়িসহ মোট ৪৪টি গাড়ির নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয় গত ২৭ জানুয়ারি। দরপত্র জমা কার্যক্রম চলে ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত। মাঝে গত ২ ও ৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গাড়িগুলো দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন আগ্রহীরা। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দরপত্র বক্স খোলা হয়। নিলামে তোলা সাবেক এমপিদের ২৪ ল্যান্ড ক্রুজারের প্রতিটির মূল্য ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ তিন হাজার ৮৯৯ টাকা। নিলামে ২৪টি গাড়ি কিনতে দরপত্র জমা পড়েছিল ১৪টিতে। ১০টি গাড়ি কিনতে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। এতে দেখা যায়, নিলামে সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল তিন কোটি ১০ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম উঠে মাত্র এক লাখ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম নিলামে দরের ৬০ শতাংশ বা তার বেশি যিনি দর দেবেন তার কাছে বিক্রির সুযোগ আছে। এই হিসেবে ন্যূনতম পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর পড়লে বিক্রির সুযোগ ছিল।’   

এ প্রসঙ্গে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোটার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী আমদানি করা গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় না নিলে নিলামে তোলার সুযোগ রয়েছে। সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলো ছাড় নেওয়ার আগেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ বিলুপ্ত হয়েছে। এ কারণে গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে যায়। সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় ছাড় নেওয়ার সুযোগ ছিল না। বর্তমানে গাড়িগুলোর কোনও দাবিদার নেই। সরকার চাইলে বন্দরকে যেকোনোভাবে দিতে পারে। এখানে আইনগত কোনও জটিলতা সৃষ্টির সুযোগ নেই।’

ছবি: প্রতিবেদক

Source link

Related posts

ইমরান খান‌কে হাড়িভাঙা আম পাঠা‌লেন শেখ হা‌সিনা

News Desk

সৌদি আরবের হাতে যাচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল

News Desk

আবেদন করার আগেই শিক্ষার্থীদের কলেজে ‘অটো ভর্তি’

News Desk

Leave a Comment