গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন বাসন থানার ওসি শাহিন খান। তবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএিমপির) উপ-কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম জানান, এখন (বিকাল ৫টা) পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
স্থানীয়দের একটি সূত্র দাবি করে, ফুটেজে দেখা যাওয়া সন্ত্রাসীরা হলেন- চান্দনা চৌরাস্তা (চান্না) এলাকার কেটু মিজান, তার সহযোগী শাহ জামাল, বুলেট ও সুজন। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী বলে তাদের দাবি। এই হত্যার ঘটনায় সাংবাদিক, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। দ্রুত বিচার ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবি উঠেছে সর্বস্তর থেকে।
জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজে নারীর সঙ্গে যুবক বাদশা মিয়ার ধস্তাধস্তি হয়েছিল সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি দাবি করেন, ওই নারী একটি দলের অংশ। ওরা আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। আমি তাদের চিনতাম না।
আসাদুজ্জামান তুহিনের বড় ভাই সেলিম বলেন, তুহিনের দুই ছেলে তৌকির হোসেন তৈকি (৫) ও আবদুল্লাহ আল ফাহিম (৩) অভিভাবক হারালো। আমার ভাইকে কেন হত্যা করা হলো? এখন তাদের দায়িত্ব কে নেবে? তিনি এই হত্যার বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে চান্দনা এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা তুহিন হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান। এ ছাড়া জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নও হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সভা করেছে গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন। মানববন্ধনে সাংবাদিকেরা সাংবাদিক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
তারা বলেন, গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক চরম হয়েছে। মহানগরের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাইকারীদের মদতদাতাদেরও চিহ্নিত করতে হবে। আসামিরা চিহ্নিত হয়েছে, তাদের সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এরপরও গ্রেফতার করতে না পারা প্রশাসনের ব্যর্থতা।
গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সাংবাদিক ফজলুল হক মোড়ল, মাজহারুল ইসলাম, মাসুদ রানা, মাহমুদা শিকদার, আমিনুল ইসলাম, শরীফ আহমেদ শামীম, শাহ শামসুল হক রিপন, আজিজুল হক, রেজাউল করিম প্রমুখ।
শুক্রবার বাদ জুমা চান্দনা চৌরাস্তা দর ঈদগাহ মাঠে প্রথম জানাজা শেষে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নিজ গ্রাম ভাটিপাড়ায় বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএিমপির) অতিরিক্ত কমিশনার অপরাধ তাহেরুল হক চৌহান বলেন, পুলিশের একাধিক টিম দুটি ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। কিছু আসামি শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই শনাক্তকারীদের গ্রেফতার করা সম্ভব। দোষীদের আটক করা গেলে ঘটনার পুরো চিত্র পরিষ্কার হবে।
প্রসঙ্গত, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তুহিনের বাড়ি তুহিনের ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ভাটিপাড়া গ্রামে। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন।