লোকালয় থেকে পানি নামছে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
বাংলাদেশ

লোকালয় থেকে পানি নামছে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

তিস্তার পানি লোকালয় থেকে দ্রুত নেমে যাওয়ায় দুই দিনেই কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সাময়িক বন্যায় আক্রান্ত জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ বসতভিটা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বসতভিটা ও সড়কে কাদা-পানি থাকায় মানুষের ভোগান্তি শেষ হয়নি। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজারহাটের বন্যাদুর্গত কয়েকটি গ্রামে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, সোমবার দুপুর ১২টার প্রতিবেদন অনুযায়ী ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদের পানি কমছে। দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর পানি কমে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্য নদ-নদীর পানিও কমছে। জেলায় কোনও নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহমান নেই।

গত শনিবার দুপুর থেকে তিস্তার পানিতে ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। রবিবার দিনভর পানিবন্দি অবস্থায় পার করলেও রাত থেকে কমতে শুরু করে। সোমবার সকালের পর বেশিরভাগ বসতভিটা থেকে পানি নেমে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বড় দরগা গ্রামের বাসিন্দা বিউটি বেগম বলেন, ‘রবিবার দিনভর ঘরে পানি আছিল। রাইতে কমা শুরু করছে। সকাল হইতে হইতে পানি নামি গেইছে। এলা ঘরবাড়িত খালি কাদো (কাদা)।’

খিতাবখা গ্রামের তিস্তা তীরবর্তী বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার বাড়িতে পানি ঢোকে নাই। তবে চারপাশে পানি ছিল। আইজ পানি মেলা (অনেক) নামি গেইছে।’

একই ইউনিয়নের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী তানজিম বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল থেকে বড় দরগা খিতাবখা ও গতিয়াশাম গ্রামের বেশ কিছু স্থানে ঘুরেছি। বেশিরভাগ বাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বাড়ির আঙ্গিনা ও রাস্তায় প্রচুর কাদা। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে আবারও বৃষ্টি শুরু হলে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়।’

লোকালয় থেকে পানি নামছে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আজ সকালে প্রায় এক দেড় ফুট পানি কমে গেছে। তবে এখনও শতাধিক পরিবার পানিবন্দি আছে। আমার ওয়ার্ডের স্লুইস গেট ও মাঝেরচর গ্রামের অনেক বাড়িঘরে পানি আছে।’

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ভাটিতে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন। সেখানে বন্যার আশঙ্কা করা হলেও দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় তেমনটা হয়নি। তবে তিস্তার একেবারে নিচু এলাকায় কয়েকটি পরিবারের বসতভিটায় পানি রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

লোকালয় থেকে পানি নামছে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

ইউনিয়নের চতুরা মৌজার বাসিন্দা মিলন মিয়া বলেন, ‘পানি অনেক নেমে গেছে। ওপারে কয়েক বাড়িতে পানি থাকলেও বেশিরভাগ বসতভিটায় নেই। তবে বাড়িঘরে কাদা আছে। মানুষ গোছগাছ (পরিচর্যা) করছে।’

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে কুড়িগ্রাম পাউবো সোমবার দুপুরে জানিয়েছে, রংপুর বিভাগ ও তার উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে গেছে। ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি কমছে। আগামী তিন দিন এসব নদ-নদীর আরও পানি কমতে পারে। ফলে নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।

Source link

Related posts

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে: বন্ধ ২৩ ট্রেন ও অর্ধশতাধিক স্টেশন

News Desk

নাবিক ও জাহাজ অক্ষত উদ্ধারের চেষ্টা করছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

News Desk

সড়কের কাজে নালা ভরাট, জলাবদ্ধতায় ৩০ কারখানার উৎপাদন বন্ধ

News Desk

Leave a Comment