পৃথিবীর দূষিত শহরের তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে দুই একের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল ঢাকা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া সপ্তাহব্যাপী লকডাউনে ঢাকার রূপ বদলে গেছে। নেই যানবাহন, নেই কালোধোঁয়া। কমে গেছে ধুলোবালিও। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেই রাজধানী ঢাকার বায়ুর গুণগত মান ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। গাড়ি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকগুণ কমে গেছে বায়ুদূষণ। কোলাহল ও যানজটের শহরে বদলে গেছে বায়ু দূষর্ণের মাত্রা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ৯৭ স্কোর নিয়ে বাতাসের মান সূচকে (একিউআই) বিশ্বে ২১তম অবস্থানে ছিল রাজধানী ঢাকা। পরিবেশবিদরা বলছেন, আদর্শ পরিবেশ এমনটাই হওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নেপালের কাঠমান্ডু, ভারতের নয়াদিল্লি এবং চীনের বেইজিং যথাক্রমে ২০৭, ১৬৮ ও ১৬৭ স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করে।
লকডাউনে রাজধানীজুড়ে কোনো যানজট নেই, মানুষের কোলাহল নেই, ব্যস্ত শহরে ফুটপাত দখলে নেই। নেই কোনো মিছিল-মিটিং। নীরব পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো রাজধানীজুড়ে। ঢাকাবাসী এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ খুব কমই হয়। একিউআই সূচকে ৫০ এর নিচে স্কোর থাকার অর্থ হলো বাতাসের মান ভালো। স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নেওয়া হয়। স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ থাকলে সেই বাতাসকে ‘স্পর্শকাতরদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। আর স্কোক ১৫১ থেকে ২০০ থাকলে তা বিবেচনা করা হয় ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে। বায়ুর মান ২০১ থেকে ৩০০ পিএম হলে সেটাকে বিবেচনা করা হয় ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, রাজধানীর বাতাসকে বিষিয়ে তুলছে যানবাহনের ধোঁয়া। বায়ুদূষণের জন্য অর্ধেক (৫০%) দায়ই মূলত তরল জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে তৈরি হওয়া এই ধোঁয়ার। ৪০ ভাগ দূষণের উৎস খড়, কাঠ, তুষের মতো জৈব বস্তুর ধোঁয়া ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা। বাকি ১০ শতাংশ দূষিত বস্তুকণা আসে ইটভাটায় কয়লা পোড়ানোর ধোঁয়া থেকে।