Image default
বাংলাদেশ

রাজশাহীতে তীব্র গরম, অতিষ্ঠ জনজীবন

মৌসুমের প্রথম থেকেই রাজশাহীতে তীব্র দাবদাহ অনুভূত হচ্ছে। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে গুমোট গরম। বেলা বাড়তেই তেতে উঠছে সবুজ নগরীর পথ-ঘাট। এমন আবহওয়ায় রাজশাহীর মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা।

রাজশাহীতে ১০-১৫ দিন ধরে মৃদ্যু তাপদাহ চলছে, যা ধীরে ধীরে আরও বাড়বে। সাধারণত বৈশাখের পরে এমন চিত্র দেখা যায়। এবার শীতের আবহ কম ছিল। গরমের আবহ তৈরি হয়েছে কিছুটা আগেই। এ সময় হালকা ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির দেখা মেলে। কিন্তু এবার তেমন কিছু নেই। খরতাপে বিবর্ণ হয়ে উঠেছে সবুজ রাজশাহী। শুকিয়ে খসে পড়ছে আমের মুকুল। চুপসে উঠেছে গুটি।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলা হয় মৃদ্যু তাপদাহ, ৩৮ থেকে ৪০ মাঝারি তাপদাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলা হয় তীব্র তাপদাহ এবং ৪২ এর ওপরে অতি তীব্র তাপদাহ। রাজশাহীতে সোমবার (২৮ মার্চ) মৃদ্যু তাপদাহ চলছে। দুপুর ১টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়ার। শনিবার (২৬ মার্চ) মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছিল। এদিন রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার (২৭ মার্চ) রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে চৈত্রের সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯ মার্চ; ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত ১৬ মার্চ থেকে রাজশাহীতে মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। ওই দিন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ১৯ মার্চ রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তাপমাত্রা ৩৬ ও ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই ওঠানামা করছে।

রাজশাহী ঘুরে দেখা যায়, প্রখর রোদের মাঝে নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করছেন। নগর উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত শ্রমিকদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ।

আরিফুল হক নামে এক শ্রমিক জানান, ঝড়-বৃষ্টি-রোদ এসব মাড়িয়েই চলতে হয়। কাজ না করলে পেটে ভাত জোটে না। হঠাৎ করে গরমের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ঘাম বেশি হচ্ছে। ঘন ঘন পানি পান করতে হচ্ছে। রৌদ্রের প্রখরতায় শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার অবস্থা।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, রবিবার (২৭ মার্চ) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফাল্গুনের শুরু থেকেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। এখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদও বাড়বে। আর বৃষ্টি কিংবা ঝড় এসবের সম্ভাবনার বিষয়টি রাজশাহী থেকে দেওয়া সম্ভব না। এটা ঢাকা থেকে জানানো হয়।

শুকিয়ে খসে পড়ছে আমের মুকুল, চুপসে উঠেছে গুটি

তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে বাতাসের আদ্রার্তা সর্বোচ্চ ছিল ৯৩ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪৩ শতাংশ। দুপুরের দিকে বাতাসের আদ্রর্তার পরিমাণ কম থাকছে।  

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, রাজশাহীতে এখন যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে তা অস্বাভাবিক না। তবে এ সময় কৃষকদের চাষাবাদে একটু বাড়তি পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ করে এখন আমের গুটি হচ্ছে। গাছের নিচে যেন রস থাকে সে বিষয়ে চাষিদের নজরদারি করতে হয়। হপার পোকার আক্রমণের ঠেকাতে স্প্রে করতে হয়। রাজশাহীর চাষিরা এ বিষয়ে সচেতন। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারাও তৎপর রয়েছেন।

Source link

Related posts

‘গরিবের সবজি গাড়িতে উঠলেই ধনীর হয়ে যায়’

News Desk

এই বাজারের সব টাকা তুলবো আমি, রামদা হাতে মিছিল করে বললেন যুবদল নেতা

News Desk

আবু সাঈদ হত্যা: রংপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল

News Desk

Leave a Comment