জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘সংস্কার, বিচার ও নতুন সংবিধানের দাবি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবো আমরা। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ এলাকায় জুলাই পদযাত্রার পথসভায় এ কথা বলেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ মাথা নত করে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহসী সন্তানরা বারবার রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব আন্দোলনেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ রক্ত দিয়েছে, লড়াই করেছে সাহসিকতার সঙ্গে। আমরা জানি শুধু জুলাই-আগস্ট আন্দোলনেই নয়, এই গণঅভ্যুত্থানের আগে ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহু মানুষ লড়াই করেছিল দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের অনেক ভাই সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলেম সমাজ সব সময় ইনসাফের পক্ষে, ইসলামের পক্ষে, দেশের পক্ষে কথা বলেছে, লড়াই করেছে। আমরা দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আমাদের আলেম ভাইয়েরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহসী নারীরা, তরুণীরা দেশের জন্য লড়াই করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ মাথা নত করে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ সেই সাহস সব সময় ধরে রাখবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া সব সময় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব সময় লড়াই করেছিল বলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া। কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বারবার আন্দোলন তৈরি হয়, এই কারণে রাস্তাঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য—সবকিছুর উন্নয়ন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। দেশের প্রতিটি জেলায় উন্নয়নের সুষম বণ্টন করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্যাসের জেলা অথচ সেখানে আবাসিক বাসা বাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আমরা রাষ্ট্রের সব জায়গায় সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে চাই।’
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ প্রমুখ।
এর আগে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং ২০২১ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে হওয়া সংঘর্ষে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন এসসিপির নেতারা। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পদযাত্রা শুরু হয়। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।