Image default
বাংলাদেশ

পানির দাম না কমালে রাজশাহীতে ওয়াসা ঘেরাও করবে ওয়ার্কার্স পার্টি

পানির দাম তিন গুণ বাড়িয়েছে রাজশাহী ওয়াসা। এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলন এমনকি ওয়াসা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহানগর কমিটির নেতারা। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এই হুঁশিয়ারি দেন। 

সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ যুবমৈত্রী, ছাত্রমৈত্রী, নারী মুক্তি সংসদ ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। 

মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, ওয়াসার নেওয়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজশাহীবাসীর জন্য জুলুম ও চরম ভোগান্তির। এখানকার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো নয়। অধিকাংশ মানুষের রোজগারের তেমন বড় কোনও উৎস নেই। করোনাকালে মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যও তেমন নেই। এমন এক পরিস্থিতিতে পানির দাম তিন গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি আত্মঘাতী। 

মানববন্ধন থেকে দলটির নেতারা বলেন, প্রতিশ্রুতি থাকলেও ওয়াসা তাদের সেবার মান কখনও বৃদ্ধি করেনি। তাদের পানি পানের অযোগ্য। প্রতিনিয়ত পানিতে ময়লা আসার অভিযোগ পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের নিজস্ব সেবার মান বৃদ্ধি না করে উল্টো পানির দাম বাড়ানো কোনও যুক্তির মধ্যেই পরে না। 

সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে ওয়াসা ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়ে বক্তারা বলেন, এখনই দাম বৃদ্ধি না করে পানি নিয়ে নগরবাসীর অভিযোগগুলো আমলে নিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পরবর্তী সময়ে গণশুনানি ও আলোচনার মধ্যদিয়ে পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এসব কথাকে এড়িয়ে গিয়ে, কাউকে তোয়াক্কা না করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলে ওয়ার্কার্স পার্টি তা মানবে না, বরং আন্দোলনে যেতে এবং ওয়াসা ঘেরাও করতে বাধ্য হবে। 

ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. এন্তাজুল হক বাবু মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন দলের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, নাজমুল করিম অপু, মনিরুজ্জামান মনির, মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ওহিদুর রহমান প্রমুখ।

তবে রাজশাহী ওয়াসা বলছে, পানির দাম তিন গুণ বাড়ানো হলেও তা উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম। এক হাজার লিটার পানি উৎপাদনে ওয়াসার খরচ হচ্ছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা। তিন গুণ বাড়ানোর পরও আবাসিক এলাকার গ্রাহক পর্যায়ে পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ টাকা ৮১ পয়সা। আর বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারে সমপরিমাণ পানির জন্য পরিশোধ করতে হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। এর আগে রাজশাহীতে আবাসিক সংযোগে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। এছাড়া বাণিজ্যিকে ছিল ৪ টাকা ৫৪ পয়সা।

রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, চলতি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ওয়াসার পানির নতুন মূল্য কার্যকর করা হয়েছে। সময় ও উৎপাদন খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পানির নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান ওয়াসার পরিধি ও সেবা অনেক বেড়েছে। নতুন নতুন পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পানির দাম সেই তুলনায় বাড়েনি। অথচ এটিই ওয়াসার আয়ের উৎস। এজন্য গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের সব দিক বিবেচনায় রেখে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট রাজশাহী ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১১ সালের ১০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াসার কার্যক্রম চালু হয়। এর আগে ওয়াসা প্রতিষ্ঠার পর ২০১৪ সালে পানির দাম বাড়ানো হয়েছিল।

 

Source link

Related posts

‘আমি কোরআন পড়ে দোয়া করি, আপনি আবারও প্রধানমন্ত্রী হোন’

News Desk

চলছে সংস্কারের কাজ, ভাঙনে হুমকির মুখে বেড়িবাঁধ

News Desk

১১ হাজার যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট ছেড়েছে ৩ ফেরি

News Desk

Leave a Comment