নারায়ণগঞ্জে বাড়ছে ডায়রিয়া, প্রতিদিন তিনশ’ রোগী হাসপাতালে
বাংলাদেশ

নারায়ণগঞ্জে বাড়ছে ডায়রিয়া, প্রতিদিন তিনশ’ রোগী হাসপাতালে

নারায়ণগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়া। প্রতিদিন গড়ে তিনশ’র বেশি রোগী নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ভর্তি হচ্ছেন। রোগীর চাপ সামলাতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে ১০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীর আইইডিসিআর কেন্দ্র থেকে আট সদস্যের একটি টিম সেখানে গিয়ে কাজ করছে।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন সুমাইয়া বেগম (৩৮)। তার স্বজনরা জানান, অনবরত পেটে ব্যথা হচ্ছে। বেশ কয়েকবার পাতলা পায়খানা হয়েছে।

মনি আক্তার জানান, তার মায়ের ডায়রিয়া হয়েছে। সকাল থেকে পাতলা পায়খানা হচ্ছে। স্যালাইন খেয়েছেন। তাতেও কমেনি। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

ডায়রিয়া বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স পারুল বেগম বলেন, ‘কথা বলার সময় নেই। রোগীর স্বজনরা দাঁড়িয়ে আছেন। খাতায় তাদের নাম লেখার সময় পাচ্ছি না। আগের তুলনায় রোগী অনেক বেড়েছে। শয্যা সংখ্যা অনেক কম। এ কারণে এক শয্যায় একাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস কে ফরহাদ জানান, গত কয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ১৫ এপ্রিল ২৯৭ জন, ১৬ এপ্রিল ৩৫২ জন, ১৭ এপ্রিল ৩২৩ জন, ১৮ এপ্রিল ৩৫২ জন এবং ১৯ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ কারণে আইইডিসিআরের আট সদস্যের একটি টিম কয়েক দিন ধরে এখানে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পানি দূষণের ফলে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জে আগত আইইডিসিআর’র আট সদস্যের টিমের তথ্যমতে, ওয়াসার পানির পাইপ লিকেজ পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় সোয়ারেজ লাইনের ভেতর দিয়ে ওয়াসার পাইপ নেওয়া হয়েছে। এতে ওয়াসার পাইপের লিকেজ দিয়ে ড্রেনের দূষিত পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া কলেরা রোগের জীবানু পাওয়া গেছে।’

রোগী বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এপ্রিলে এসে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এর মধ্যে শিশু ও পুরুষ রোগী বেশি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১১ থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।’

ডা. ফরহাদ বলেন, ‘অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১০টি শয্যার পাশাপাশি বাইরে আরও ১০টি শয্যা সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ২০ শয্যা দিয়ে চাপ সামলানো অসম্ভব হলে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে ওয়ার্ডটি খালি করে রেখেছি। তবে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আর গুরুতরদের শুধু ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিশুদ্ধ ও ফুটিয়ে পানি পান করতে হবে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ বিষয়ে আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে কথা বলেছি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের দিয়ে মাইকিং করার কথা বলেছি। এছাড়া হাসপাতালের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।’

Source link

Related posts

ব্যবসায়ীর গুদাম ও বা‌ড়ি‌ থে‌কে ২৯৯ বস্তা সার উদ্ধার

News Desk

আরও ১৮৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩৬৯৭

News Desk

‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে সবাইকে নিয়ে আসবো’

News Desk

Leave a Comment