বৈরী আবহাওয়ায় টানা বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দেড় শতাধিকের বেশি ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া টেকনাফের হ্নীলায়ও ৩০০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। দ্বীপে স্লুইস গেট অকেজো থাকায় জমে থাকছে পানি। এতে কয়েক হাজার মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
শনিবার (২৮ জুন) ভোর থেকে টানা ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে সেন্টমার্টিনে। জোয়ার হওয়ায় বেড়েছে ঢেউ। এতে শঙ্কা বাড়ছে দ্বীপের ৯ হাজার মানুষের। কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায়ও শুরু হয়েছে বৃষ্টি।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইউপি সদস্য আল নোমান বলেন, ‘টানা বৃষ্টির পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে দ্বীপে দেড়শর বেশি ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে দ্বীপের মানুষের কষ্টের মাত্রা বেড়েছে। এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। মূলত স্লুইস গেট থেকে পানি বের হতে না পারায় এলাকাগুলোতে পানি জমে আছে। এতে মানুষের ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়েছে। এই স্লুইস গেটের মেরামতের জন্য বারবার বলা হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।’
দ্বীপবাসী বলছে, শনিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত এখনও চলমান রয়েছে। যার কারণে দ্বীপের মাঝের পাড়া, পশ্চিম পাড়া, গোলা পাড়া ও পূর্ব পাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। এখানকার দেড়শ ঘরবাড়ি এখনও পানিবন্দি হয়ে আছে।’
মাঝের পাড়া বদি আলম বলেন, ‘আমার ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে আমরা আমি বন্দি হয়ে আছি। পরিবারের সদস্যদের অন্যত্রে পাঠিয়ে দিয়ে ঘরে অবস্থান করছি। আমরা কেউ এখনও মুখে কোনও খাবার দিতে পারিনি। রান্না করার মতো কোনও পরিবেশ নেই। এভাবে চললে রাতে থাকা নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে আছি। আমার মতো এখানে অনেক পরিবার পানিবন্দি আছি। কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।’
দ্বীপের বসবাসকারী জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘দ্বীপে কয়েকশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এদের কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। বঙ্গোপসাগরের ভাটা হলে জোয়ারের পানি এখনও নামেনি। মূলত স্লুইস গেটের অভাবের কারণে পানি নামছে না। এটি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত এটি সমাধানের পথ বের করা।’
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু ফয়েজ বলেন, ‘দ্বীপে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে জোয়ারের গতির তীব্রতার কারণে অনেক গ্রামে পানি ঢুকেছে। যার ফলে কয়েকশ ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের খোঁজ নিচ্ছি।’
এদিকে খাল বরাট হয়ে যাওয়ায় টানা বৃষ্টিতে টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারী হ্নীলার প্রায় ৩০০ পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে খাল বরাট হয়ে যাওয়ায় আমার এলাকায় কয়েকশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও সাগরের জোয়ারের পানিতে দ্বীপের কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তাদের সহায়তায় দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় কিছু ঘরবাড়ি পানি বন্দি রয়েছে। তাদেরও আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’