Image default
বাংলাদেশ

খাগড়াছড়ির তিন গ্রামে পানির সঙ্কট

তাপদাহ ও খরায় পাহাড়ে শুকিয়ে গেছে পানির উৎস। এতে করে খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ির কালো পাহাড় এলাকায় তিন গ্রামে সুপেয় জলের সংকট চলছে। বাধ্য হয়ে ময়লা পানি ব্যবহার করছে গ্রামবাসী। পাহাড়ি ছড়ায় গভীর কুয়া করে জল সংগ্রহ করছে তারা। তিন গ্রামে কোনো নলকূপ না থাকায় হাহাকার চলছে।

জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমের ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ এই সময়ে সংকট তীব্র হয়। পানির জন্য ঝিরি ঝরনার উপর নির্ভরশীল মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়। ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানি থেকে এখানকার বাসিন্দাদের বঞ্চিত থাকতে হয়। ভোর হলেই পানি সংগ্রহের সংগ্রাম শুরু হয়। লক্ষ্মীছড়ি সদর উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে দুল্যাতলী ইউনিয়নের কালো পাহাড় এলাকায় তিন গ্রামের বাসিন্দারা বসবাস করে। এর মধ্যে দুরছড়ি হেডম্যান পাড়ায় ১শ ২০ পরিবার বাস করে। ডানে বানর কাটা ও বামে বানর কাটা গ্রামের আরো ১শ ৪০ পরিবার বাস করে। এসব গ্রামের আশেপাশে পানির কোনো উৎস নেই।

স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মৌসুমে পানির কষ্ট বাড়ে। আশেপাশের ঝিরি শুকিয়ে যায়। এবার বিলম্বিত বর্ষার কারণে ঝিরি ও ছড়া শুকিয়ে গেছে। গ্রাম থেকে এক কিলোমটিার দূরে গিয়ে পানি সংগ্রহ করে আনতে হয়। সুপেয় জলের জন্য অন্তত ১০ ফুট গভীর কুয়া খনন করতে হয়। জমা পানিতে নানা ধরনের জীবাণু থাকে। তারপরও এই পানি ব্যবহার করতে হয়। ময়লা পানি খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তীব্র কষ্টে পানি জুটলেও তা নিরাপদ নয়। বাধ্য হয় অপরিষ্কার পানি সংগ্রহ করতে হয়।

দুল্যাতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ত্রিলন চাকমা জানান, জেলা পরিষদের উদ্যোগে দুই বছর আগে কালো পাহাড় থেকে পাইপের মাধ্যমে গ্রামে পানি সরবরাহ করার প্রকল্প নেওয়া হয়। বর্তমানে কালো পাহাড়ের পানির উৎস শুকিয়ে গেছে। এতে মানুষ ছাড়াও গবাদি পশুর পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ২শ ৬০ পরিবার পানির কষ্টে রয়েছে। দুই মাস আগে উপজেলা সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে এসব এলাকার জন্য নলকূপ দাবি করেছি। তবে তা এখনো স্থাপিত হয়নি। এতে পানির কষ্ট লাঘব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে দূষিত পানি পান করার কারণে গ্রামে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এতে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিল বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর প্রতিটি ইউনিয়নের নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে। জনপ্রতিনিধিদের চাহিদার ভিত্তিতে নলকূপ স্থাপনের কাজ চলে। এক্ষেত্রে এসব সংকট কবলিত এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াসিন জানান, চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়া এবং তাপদাহের কারণে পানির উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া এসব দুর্গম এলাকায় পানির স্তর নিচে হওয়ায় নলকূপ স্থাপন কষ্টসাধ্য।

Related posts

একদিকে জলদস্যু অন্যদিকে মিয়ানমারের গুলি, আতঙ্কে কক্সবাজারের জেলেরা

News Desk

সিসিকের নির্দেশনার পর বন্ধ সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ ৬ মার্কেট

News Desk

ঈদ ঘিরে জমজমাট ভৈরবের জুতাশিল্প, ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা

News Desk

Leave a Comment