চোখের সামনেই ভেসে যাচ্ছে সবকিছু, গোমতীপাড়ে কান্নার রোল
বাংলাদেশ

চোখের সামনেই ভেসে যাচ্ছে সবকিছু, গোমতীপাড়ে কান্নার রোল

গোমতীর তীরে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন এক যুবক। কখনও দুই হাত আকাশের দিকে তুলে আবার কখনও কপাল চাপড়ে। খানিকক্ষণ আগেই ভেসে গেছে তার ঘরের সবকিছু। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে ওই যুবককে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বুরবুড়িয়া এলাকায় কাঁদতে দেখা গেছে।

আহাজারি করা ওই যুবকের নাম মো. ফরহাদ হোসেন। তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুরবুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।

কথা বলে জানা গেছে, গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে পড়েছে। প্রবল বেগে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় বুড়িচংয়ের বুরবুড়িয়া এলাকায় প্রথমে একটি ছোট গর্ত দিয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরেই তা বড় আকারে রূপ নিয়ে বাঁধ ধসে পড়ে। এরপর থেকে প্রবল স্রোতে পানি ঢুকতে শুরু করে বুড়িচং উপজেলায়। স্রোতের পানিতে ভেসে গেছে তার ঘরের জিনিসপত্র। নড়বড়ে ঘরটিও ভেসে যাচ্ছে। চোখের সামনে এভাবে সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া দেখে ভেঙে পড়েছেন ফরহাদ।

তিনি জানান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার ১১ মাসের একটি শিশুসন্তান রয়েছে। তাকে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বেড়িবাঁধে। আচমকা পানি ঢুকে পড়ায় ঘরের কিছুই আনতে পারেননি। একরকম এক কাপড়ে বের হয়েছেন।

আহাজারি করতে করতে ফরহাদ বলেন, ‘আমার কিছুই নাই। বাচ্চাদের জন্যেও কিছু রাখতে পারি নাই। সিএনজিচালিত অটোরিকশাটা কোন মনে স্থানীয়দের নিয়ে রাস্তায় উঠিয়েছি। আর কিছুই নেই। শূন্য হাতে আমার পরিবার এখন পথে বসেছে।’

এ সময় ফরহাদের মতো শত শত বাসিন্দাকে সড়কে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন পাশের আশ্রয়কেন্দ্রে। কেউবা বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আত্মীয়দের বাড়ি উঠেছেন। সবার চোখের জল টলমল করছে। কেউ নামাজ পড়ে দোয়া করছেন। কেউ আজান দিচ্ছেন। মসজিদে মসজিদে শোনা যাচ্ছে সতর্কতা অনুরোধ।

জানা গেছে, বুড়িচং উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, বুড়িচং সদর, বাকশিমুল এবং রাজাপুর ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রাম সকাল নাগাদ যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিদা আক্তার জানিয়েছেন, বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া অংশে পানি বাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। প্রবল প্রবাহের কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। সকলকে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

Source link

Related posts

গরু ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের দিন শেষ

News Desk

করোনা উপসর্গে নিয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের মৃত্যু

News Desk

‌‘হিজড়া সেজে’ চাঁদাবাজি করছেন অর্ধশতাধিক পুরুষ

News Desk

Leave a Comment