গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি না হয় রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাই আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার মা ৭০ বছরের বৃদ্ধা। দুর্বৃত্তরা কয়েক ঘণ্টাব্যাপী তার রুমসহ বাড়ির সব কিছু তছনছ করেছে, আগুন দিয়েছে। তাকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ উদ্ধার করতে হলো কেন? এ নারী কার কী ক্ষতি করেছে? কারা আমাকে, আমার মাকে হত্যা করতে চেয়েছে, জুয়েলকে হত্যা করেছে? তদন্তের মাধ্যমে যেন এর সঠিক বিচার হয়। দেশ তথা গাজীপুরের মানুষ দেখুক কারা অপরাধী? কারা মুখোশ পরে মানুষের সম্পদ, মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে চেয়েছিল? মেয়রের সন্তান হিসেবে আমি এর বিচার চাই।’
নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুয়েলের বাবার চোখের পানি, আর্তনাদ- এমন আর্তনাদ আর কারও দেখতে চাই না। অনেক রক্তপাত, আনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।’ আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানের বিষয়ে তিনি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সমবেত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে জাহাঙ্গীর আলম তার গাজীপুর মহানগরীর হারিকেন এলাকার বাসভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, আলেম ওলামা, নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশ্যে উত্তরায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আল্লাহর রহমতে এবং সবার দোয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় আমি বেঁচে ফিরেছি। আমি মায়ের কোলে ফিরে এসেছি।’ তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং গাজীপুরবাসী সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়ায় তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শনিবার সকাল ৮টায় চিকিৎসা শেষে জাহাঙ্গীর আলম হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে গাজীপুরের চান্দনা এলাকার নিহত তার সহকারী যুবলীগ নেতা হামিদুল ইসলাম জুয়েল মোল্লার বাড়িতে গিয়ে তার কবর জিয়ারত করেন। তিনি জুয়েল মোল্লার বাবাসহ স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, খোঁজখবর নেন এবং সমবেদনা জানান।
সেখান থেকে বাসায় ফিরে তার মা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় ছেলেকে জড়িয়ে ধরে মা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বিকালে জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গীদের নিয়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাওয়ার পথে উত্তরায় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তদের হামলায় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গী যুবলীগ নেতা হামিদুল ইসলাম মোল্লা জুয়েল নিহত এবং জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন কাউন্সিলর আহত হম। এ সময় বহরের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ২০ জুলাই রাতে একদল দুর্বৃত্ত জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং আগুন দেয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার মা মেয়র জায়েদা খাতুনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেন।

