গাজীপুরে ‌‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু, মোজাম্মেল হকের বাড়িতে র‌্যাব
বাংলাদেশ

গাজীপুরে ‌‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু, মোজাম্মেল হকের বাড়িতে র‌্যাব

গাজীপুরে শুক্রবার রাতে ছাত্রদের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার থেকে সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে যৌথ বাহিনী। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। এর অংশ হিসেবে গাজীপুরে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। 

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে অভিযান শুরু হয়। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে চেকপোস্ট বসিয়েছে সেনাবাহিনী। মোটরসাইকেলসহ সড়কে চলাচল করা বিভিন্ন গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন সেনাসদস্যরা। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অপরাধীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। রাত ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গেছে র‌্যাব। সেখানে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তবে এসব বিষয়ে জানতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ও অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) তাহেরুল হক চৌহানকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। এজন্য যৌথ অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এর আগে শুক্রবার রাতে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা চালান। তারা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেন। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মাইকিং শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলেন। এ সময় কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এ হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের কাছে খবর আসে, ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা রওনা হন। দ্রুত ১৫-১৬ জন ঘটনাস্থলে চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। এতে বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। তাদের হাতে রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগেই ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও পেটানো হয়।’

শনিবার দুপুরে শহরের রাজবাড়ী সড়কে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে গাজীপুর সদর থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

গতরাতের ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় গাজীপুরে। অপরাধীদের ধরতে আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সরকার দেশব্যাপী অপারেশন ডেভিল হান্টের ঘোষণা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর ডিসি অফিসের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক কর্মীকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এর জেরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় যৌথ অভিযান।

Source link

Related posts

স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে বোমা হামলা

News Desk

সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ

News Desk

সারা বছর নিষ্ক্রিয়, বর্ষা এলে টনক নড়ে প্রশাসনের

News Desk

Leave a Comment