কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনের শুরুতে রবিবার খুলনায় সড়কে ফের ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। খুলনা শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে অসংখ্য মানুষ পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকছে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত গল্লামারী-জিরোপয়েন্ট এলাকায় দেখা যায়, শহরে প্রবেশ মুখে পুলিশের চেকপোস্টের কিছু দূরে ইজিবাইক থেকে যাত্রী নামানো হচ্ছে। তারপর তারা পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকে অন্য ইজিবাইকে গন্তব্যে যাচ্ছেন। ঈদের আগে যারা শহর ছেড়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তারাও ফিরতে শুরু করেছেন। সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশাভ্যান আগের দিনের থেকে বেড়েছে।
এদিকে সাধারণ মানুষের চলাচলে করোনা সংক্রমণ, মৃত্যু আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, টানা লকডাউন ও বিধিনিষেধের কারণে খুলনায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে এসেছে। এটা খুবই স্বস্তির খবর কিন্তু চলমান লকডাউনে পথে-ঘাটে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সংক্রমণ পুনরায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি মাস্ক ব্যবহার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, লকডাউনে ঘরে থাকা ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার আহবান জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর শিববাড়ি, মজিদ সরণী, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, ময়লাপোতা মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। চেকপোস্ট বসিয়ে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে রাস্তায় মানুষের অহেতুক চলাচল বেড়েছে। মূল সড়ক ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় অলিগলিতে ইজিবাইক, রিকশাভ্যান ও মোটর সাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, খুলনাসহ সারাদেশে করোনার ঊর্ধমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধে শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে সরকার ঘোষিত কঠোরতম বিধি-নিষেধ শুরু হয়েছে। খুলনায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ১৯০ জন, মৃত্যু হয়েছে ৫৫৭ জনের। সর্বশেষ শনিবার ৪৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ১৯ শতাংশ। এদিকে গত দু’দিনে খুলনায় বিধি নিষেধ অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮৪টি মামলায় ৮৪ জনকে ৫৫ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য সহায়তা প্রদান করেন।