খালের পানির স্রোতে ঝুঁকিতে ব্রিজ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
বাংলাদেশ

খালের পানির স্রোতে ঝুঁকিতে ব্রিজ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একটি খাল খনন প্রকল্পের পানির স্রোতে ১০ মিটার আয়তনের একটি গ্রামীণ ব্রিজ ধসে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। ঠিকাদারের লোকজন বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ব্রিজটি রক্ষার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত এটির টিকে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাগজিপাড়া গ্রামের গিদারি নদী নামক খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটি অর্ধশত বছরের পুরনো। ইউনিয়নের ছয় গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের যাতায়াতে এটি ব্যবহৃত হয়। ব্রিজটি ধসে গেলে এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যাতায়াত সুবিধা ভেঙে পড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।

তবে পাউবো বলছে, খাল খননের কারণে নয়, স্থানীয়রা মাছ ধরার জন্য ব্রিজের দুটি ফটকের একটি বন্ধ করে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করেছিল। ফলে আরেকটি ফটক দিয়ে তীব্র বেগে পানি প্রবাহিত হয়ে ব্রিজটির নিচের মাটি খসে গেছে।

এলাকাবাসী জানায়, সদ্য খনন করা গিদারি নদী দিয়ে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ব্রিজটির ভাটির দিকের নিচের অংশের মাটি সরে যায়। শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পানির তীব্র স্রোতে ব্রিজের নিচের মাটি আরও সরে গিয়ে এর মাঝের পিলারের অর্ধেক অংশ খসে পড়ে। ফলে ব্রিজটি চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ব্রিজটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। এ অবস্থায় ব্রিজটি রক্ষায় পাউবোর খাল খননের ঠিকাদারের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

চাকলির পাড় গ্রামের বাসিন্দা আমবার আলী ও লিটন বলেন, ‘ব্রিজটি পাকিস্তান আমলের। ইউনিয়নের কাগজিপাড়া, আমভদ্রপাড়া, চাকলির পাড়, জটিয়াপাড়াসহ ৬ গ্রামের ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষের যাতায়াতের ভরসা এই ব্রিজ। স্থানীয় কাগজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ব্রিজ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। এটি ভেঙে পড়লে আমাদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হবে।’ ব্রিজটি রক্ষায় দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।

খনন প্রকল্পের ঠিকাদারের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ব্রিজটি অনেক পুরনো। ইটের তৈরি পিলারের ওপর নির্মিত। এর উত্তরের উজানের চেয়ে দক্ষিণে ভাটি অংশ অনেক নিচু। এজন্য আমরা উভয় দিকে কয়েক মিটার মাটি খনন করিনি। কিন্তু পানির স্রোতে এটির পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে। পাউবো কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা জিও ব্যাগ দিয়ে এটি ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে তিন ধাপে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এরপরও রক্ষা হবে কিনা বলা যাচ্ছে না।’

পাউবো’র কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘খাল খননের জন্য ব্রিজটি ঝুঁকিতে পড়েনি। বরং এর নিচের একটি অংশ দিয়ে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। ফলে পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে তীব্র স্রোতের কারণে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে। তারপরও আমরা জিও ব্যাগ ফেলে এটি ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে এই প্রকৌশলী বলেন, ‘ব্রিজটি অনেক পুরনো। এবারের মতো হয়তো ব্রিজটি রক্ষা পাবে। কিন্তু আগামী বছরের মধ্যে ওই স্থানে নতুন ব্রিজ করা প্রয়োজন হতে পারে।’

Source link

Related posts

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে ময়মনসিংহের ৩০টি বধ্যভূমি-গণকবর

News Desk

মায়ের বুকে জড়িয়ে মৃত্যুর সহযাত্রী ১ বছরের শিশু আরিফা

News Desk

এক সড়কে দুই জেলার মানুষের দুর্ভোগ

News Desk

Leave a Comment