কর্মকর্তার বিয়ে, তাই কাঙাল হরিনাথের প্রয়াণ দিবসে ছিল না কোনও আয়োজন
বাংলাদেশ

কর্মকর্তার বিয়ে, তাই কাঙাল হরিনাথের প্রয়াণ দিবসে ছিল না কোনও আয়োজন

বাংলাদেশের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ১২৯তম প্রয়াণ দিবস ছিল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল)। ১৮৯৬ সালের এই দিনে ইহলোক ত্যাগ করেন তিনি। তবে তার প্রয়াণ দিবসে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর স্মৃতিজাদুঘরে ছিল না এই কীর্তিমানের স্মরণে কোনও আয়োজন। এ ছাড়াও উপজেলা প্রশাসন বা কোনও প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকেও কোনও আয়োজন করা হয়নি। কেবল জাদুঘরে অবস্থিত তার ম্যুরালে জাদুঘরের কর্মচারীরা দায়সারাভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফুলের মালা দিয়েছেন। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন কাঙাল হরিনাথের পরিজনরা।

কাঙাল হরিনাথ মজুমদার ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক, নারীশিক্ষার পথিকৃৎ, বাউল, সাধক ও সাহিত্যিক। কাঙাল হরিনাথ ১৮৩৩ সালের ২২ জুলাই কুমারখালীর কুণ্ডুপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৬৩ সালের এপ্রিল মাসে কুমারখালী থেকে ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। তার স্মরণে কুমারখালীতে একটি স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারখালী পৌরসভার কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার স্মৃতি জাদুঘরের সরেজমিন দেখা যায়, সেখানে সুনসান নীরবতা। প্রধান গেটে ঝুলছে তালা। চত্বরে অবস্থিত ম্যুরালে ফুলের মালা ও পুষ্পস্তবক রয়েছে।

এ সময় জাদুঘরের নিরাপত্তাকর্মী রুহুল আমিন বলেন, ‘জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক তাপস কুমার মণ্ডল চলতি মাসের ৫ তারিখ যোগদান করেছেন। শুক্রবার কাঙাল হরিনাথের প্রয়াণ দিন। আবার আজই স্যারের (তত্ত্বাবধায়ক) বিয়ে। সে জন্য আলোচনা সভা ও অন্যান্য অনু্ষ্ঠান পেছানো হয়েছে। পরে করা হবে।’

কোনও আয়োজন না থাকায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাঙাল হরিনাথের চতুর্থ বংশধর মৃত অশোক মজুমদারের স্ত্রী গীতা রানী মজুমদার। তিনি বলেন, ‘কাঙাল ভাঙিয়ে কতজন বড়লোক হয়েছে। তবে সেই কাঙাল কাঙালই আছে। কাঙালের মতন যাচ্ছে তার তিরোধান দিবস।’

আক্ষেপ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন কাঙাল হরিনাথ। কিন্তু আজ কাঙালই বঞ্চিত। আমরাই সবচেয়ে বঞ্চিত, অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। অরক্ষিত কাঙালের সমাধি ও ব্যবহৃত তৈজসপত্র। প্রশাসন তো দূরের কথা, সাংবাদিকরাও খোঁজ নেন না।’

গীতা রাণীর ছেলে দেবাশীষ মজুমদার আক্ষেপ করে বলেন, ‘সাংবাদিকরা কাঙালকে গুরু দাবি করেন। কিন্তু গুরুকে শুধু চার দেওয়ালের মধ্যে রেখে স্মরণ করলেই হবে না। কাঙালের সব অনু্ষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে কাঙাল হরিনাথ স্মৃতিজাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক তাপস কুমার মণ্ডলকে ফোন দেওয়া হয়। তার ফোনটি অন্য একজন রিসিভ করে বলেন, ‘তাপসের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। পরে কথা বলে নেবেন।’

কাঙাল হরিনাথের অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত জাদুঘর কর্তৃপক্ষ করে থাকেন বলে ফোনে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আয়োজনের বিষয়টি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Source link

Related posts

বিচ্ছিন্ন কবজি জোড়ায় সফল খুলনার চিকিৎসকরা

News Desk

পথনাট্যে অব্যবস্থাপনা ও আর্তনাদের প্রতিচ্ছবি

News Desk

জামিন পাননি রিজেন্টের সাহেদ

News Desk

Leave a Comment