এক হিমাগারে পচে গেলো ১০ কোটি টাকার আলু!
বাংলাদেশ

এক হিমাগারে পচে গেলো ১০ কোটি টাকার আলু!

রাজশাহীর পবা উপজেলার মদনহাটি এলাকায় ‘আমান কোল্ড স্টোরেজ’ নামে এক হিমাগারে পচে গেছে কৃষকের প্রায় ১০ কোটি টাকার আলু। এ নিয়ে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শতাধিক কৃষক ও আলু চাষি হিমাগারের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। একই সঙ্গে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। 

অপরদিকে, পচা আলু হিমাগার থেকে বের করে বাইরে ফেলে দিচ্ছে স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কৃষকরা।

আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হিমাগারের গ্যাস মেশিন খারাপ থাকার পরও লক্ষাধিক বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফলে স্বল্প গ্যাসের কারণে আলু পচে গেছে। হিমাগারের ৯৫ শতাংশ আলু পচেছে। যেগুলো পচতে বাকি আছে, সেগুলোরও বিক্রি যাবে না।

হিমাগার কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এখানে এক লাখ ৬৬ হাজার বস্তা আলু আছে। প্রতি বস্তায় আলুর পরিমাণ ৫০ কেজি। বর্তমানে ৫০ কেজি আলুর বস্তার দাম ৬০০ টাকা। সব আলু পচে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নয় কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। 

কৃষক ও চাষিরা বলছেন, সব আলুই পচে গেছে। বস্তায় একটা আলু পচে যাওয়া মানেই সব আলু নষ্ট হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী নেই। হিমাগারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে তারা ভাবতেও পারেননি।

হিমাগারে গিয়ে দেখা গেছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদামঘর থেকে আলুর বস্তা বের করে বাতাস দেওয়া হচ্ছিল। তখনই কৃষকরা আলু পচে যাওয়ার কথা জানতে পারেন। এরপর ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষকরা হিমাগারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগামী ১০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেন।

হিমাগারের সামনে অবস্থান নেওয়া আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলেন, যে বস্তা খোলা হচ্ছে সেখান থেকেই বের হচ্ছে পচা আলু। তীব্র গরমে দুর্বল মেশিন ঠিকমতো গুদাম ঠান্ডা রাখতে পারেনি। ফলে আমাদের সব আলু পচে গেছে। এখন গুদাম থেকে পচা গন্ধ বের হচ্ছে। এগুলো বাজারে বিক্রির উপযোগী নয়।

আলু

ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, আমি ৭ হাজার বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন জানতে পারছি সব আলু পচে গেছে। ক্ষতিপূরণ না দিলে আমি পথে বসবো। 

তিনি বলেন, মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত হিমাগারে আলু রাখেন কৃষকরা। এজন্য বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। আলুর বস্তা বের করার সময় টাকা দিতে হয়।

রানা সর্দার বলেন, গত বছর আমি এই হিমাগারে আলু রেখেছিলাম। বিক্রির পর ক্রেতারা অভিযোগ করেন আলুর মান ভালো না। নষ্ট হয়ে গেছে। এবার অধিকাংশ আলু অন্য হিমাগারে রেখেছি। শুধু একটা ট্রলি ভুল করে এই হিমাগারে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে ৫৭ বস্তা আলু ছিল। সবগুলো এখন পচে গেছে।

এক হিমাগারে পচে গেলো ১০ কোটি টাকার আলু!

হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, আলু নানা কারণে পচতে পারে। আলুর মান খারাপ হলেও পচে যায়। কেন পচেছে তা জানি না। কী পরিমাণ পচেছে সে হিসাব এখনও করা হয়নি। আমার মালিক ১০ দিনের সময় নিয়েছেন। এটা আমাদের একদিনের ব্যবসা নয়। কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় তা দেখছি আমরা।

Source link

Related posts

চরমোনাই মাহফিলগামী ট্রলারডুবি, ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

News Desk

পদ্মা সেতু দিয়ে সময়মতো চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে পাটপণ্য

News Desk

নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম

News Desk

Leave a Comment