আন্দোলনে নিহত রাহুলের মরদেহ কবর থেকে তুলতে দেয়নি পরিবার ও এলাকাবাসী
বাংলাদেশ

আন্দোলনে নিহত রাহুলের মরদেহ কবর থেকে তুলতে দেয়নি পরিবার ও এলাকাবাসী

দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত রবিউল ইসলাম রাহুলের মরদেহ কবর থেকে তুলতে দেয়নি পরিবার ও এলাকাবাসী। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে তোলার কথা ছিল। কোতোয়ালি থানা থেকে লাশ তোলার বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর তারা লাশ তুলতে দেবেন না বলে জানান। জড়ো হয়ে একই কথা জানান এলাকাবাসীও। পরে মরদেহ না তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রশাসন।

নিহত শিক্ষার্থী রাহুল ইসলাম দিনাজপুর সদর উপজেলার ৩নং ফাজিলপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজারের বিদুরশাহী মহারাজপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছোট ছেলে। তিনি রানীগঞ্জ এহিয়া হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহতের বড় ভাই আল-আমিন ইসলাম বলেন, আমার ছোট ভাই শহীদ হয়েছে। আমাদেরকে বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছে লাশ উত্তোলনের জন্য। আমরা চাই না লাশ উত্তোলন করা হোক। আমরা নিউজে যেটা শুনেছি যে, কোনও শহীদের লাশ উঠবে না। আমার ভাই বীরের প্রতীক পেয়েছে, শহীদ হয়েছে। আমাদেরকে থানা থেকে বারবার বলছে লাশ উত্তোলনের বিষয়ে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমাদেরকে জানানো হয় লাশ উত্তোলনের জন্য। এটা ময়নাতদন্ত হবে। আমরা বুঝছি না ময়না তদন্ত কোন কাজে আসবে। মেডিক্যাল থেকে চিকিৎসা হয়েছে, সেখান থেকে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। আশেপাশের এলাকাবাসীও চাচ্ছে যেন মরদেহ তোলা না হয়। সারা বিশ্ব দেখেছে, সে শহীদ হয়েছে। এরপরও কেন লাশ উত্তোলন করা হবে তা আমরা বুঝছি না। 

নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, রাতে আমাদেরকে লাশ উত্তোলন করার কথা বলে। আমার ছেলের লাশ উত্তোলন করতে দেবো না। আমার স্ত্রী সারা রাত কেঁদেছে, লাশ উত্তোলন করতে দেবে না। আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। আমরা কোনোভাবেই লাশ উত্তোলন করতে দেবো না।

সেখানে জড়ো হন এলাকাবাসীও

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মতিউর রহমান জানান, আদালতের আদেশ ছিল মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করার। সেই হিসেবে দিনক্ষণ নির্ধারণ করে পরিবারকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরিবার থেকে লাশ উত্তোলন করতে দেবে না জানায়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আপাতত মরদেহ কবর থেকে তোলা স্থগিত করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন রাহুল। তাৎক্ষণিক তাকে প্রথমে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শরীর থেকে গুলি বের করেন চিকিৎসকরা। পরে হাসপাতাল থেকে রাহুলকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ৭ আগস্ট বিকাল থেকে তার তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সন্ধ্যায় তাকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় মারা যান।

Source link

Related posts

চট্টগ্রামে চা দোকানির ‌‘আত্মহত্যা’

News Desk

ঘূর্ণিঝড় হামুন: নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সেন্টমার্টিনে মাইকিং

News Desk

এক বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলো প্রার্থীদের পোস্টার

News Desk

Leave a Comment