আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশ

আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি রায়ের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দসহ প্রতিষ্ঠানের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মুক্তা বেগম নামে স্কুলের সাবেক এক শিক্ষার্থী কুড়িগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি করেন।

আদালত মামলাটি গ্রহণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুড়িগ্রামের উপপরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বাদীর আইনজীবী ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান দুলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলায় জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলমসহ ৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টিআর-কাবিখা প্রকল্প হতে সরকারি বরাদ্দের প্রায় ১৭ লাখ টাকা, বিদ্যালয়ের দোকানঘরের জামানত, মাসিক ভাড়া এবং নিয়োগ বাণিজ্যসহ সর্বমোট ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের কোনও ব্যাংক লেনদেন না করারও অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে, ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি রায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক গঠিত পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণ কমিটি। পরে উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্তে একই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ২০০৪ সালের ৫ নম্বর আইন (দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪) অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ২০২০ সালে পাঠানো ওই প্রতিবেদন গত তিন বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। ‘রহস্যজনক’ কারণে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়নি অধিদফতর কিংবা মন্ত্রণালয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি রায় সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদসহ একাধিক পদে গোপনে জনবল নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব পদের জন্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কোনও কিছু বলা হচ্ছে না। এ নিয়ে স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গেও গোপনীয়তা রাখা হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রধান শিক্ষক গোপনে সকল প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছেন। তবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমি জানি না। তবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি এসব নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’

বিদ্যালয়ে চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এখনও নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি।’ বাণিজ্যের অভিযোগ মিথ্যা ও ভুয়া বলে দাবি করেন তিনি।

Source link

Related posts

বিশিষ্টজনদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক শেষ

News Desk

মেয়াদোত্তীর্ণ কীটনাশকে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

News Desk

সংসদে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় বৈঠক শুরু

News Desk

Leave a Comment