অপারেশনের পর সন্তানের মৃত্যু, অভিযোগ নেই বলে লিখিত দিলেন বাবা
বাংলাদেশ

অপারেশনের পর সন্তানের মৃত্যু, অভিযোগ নেই বলে লিখিত দিলেন বাবা

ফরিদপুরের পিয়ারলেস হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টনসিল অপারেশনের ১০ ঘণ্টা পর মারা গেছে নুসরাত খানম (১১) নামে এক শিশু। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। তবে শিশুটির মা হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও অভিযোগ নেই মর্মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত দিয়েছেন শিশুর বাবা।

এদিকে, খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা সেখানে গিয়ে দেখতে পান লাশসহ স্বজনদের দ্রুত সরিয়ে দিতে তৎপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুর মা জাহানারা খানম কাঁদছিলেন। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতিতে শিশুর স্বজনদের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখা গেছে হাসপাতালের দায়িত্বশীল কয়েকজনকে। তবে তারা পরিচয় দিতে রাজি হননি।

নুসরাত খানম রাজবাড়ীর আহলাদীপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী মামুন সিকদারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।  

শিশুর স্বজন মো. সুমন মিয়া বলেন, ‘সোমবার বিকালে নুসরাতকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উষা রঞ্জন চক্রবর্তী নুসরাতের গলার টনসিল অপারেশন করেন।’

নুসরাতের মা জাহানারা খানম বলেন, ‌‘অপারেশনের পর বিকাল ৩টার দিকে নুসরাতের প্রচণ্ড পেটব্যথা শুরু হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিকিৎসক বা হাসপাতালের কেউই এগিয়ে আসেননি। ধীরে ধীরে নুসরাত নিস্তেজ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসক এসে জানান নুসরাত মারা গেছে।’

মামুন সিকদার বলেন, ‘অপারেশনের পর চিকিৎসায় অবহেলায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আমি কাকে দোষারোপ করবো? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত দিতে বলেছিল। এজন্য লিখিত দিয়ে মেয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এম এ জলিল বলেন, ‘খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে শিশুর বাবার অভিযোগ না থাকায় কোনও পদক্ষেপ বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’    

এ বিষয়ে চিকিৎসক উষা রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান ফিরলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসি। এরপর স্বজনরা তাকে স্যুপ খাওয়ালে পেটব্যথা শুরু হয়। খবর পেয়ে বিকাল ৫টার দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখতে পাই। স্যুপ খাওয়ানোর ফলে পেটে গ্যাস থেকে হার্টে সমস্যা হয়েছে বলে ধারণা করছি। চেষ্টা করেও এই পরিস্থিতি থেকে তাকে স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। এজন্য মৃত্যু হয়েছে।’

এর আগে নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগে পিয়ারলেস হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই পরিচালককে সাত দিন করে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে শহরের ভাঙা রাস্তার মোড়ে অবস্থিত পিয়ারলেস হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমাম রাজি-টুলু।

কয়েক মাস আগে পিয়ারলেস হাসপাতালে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের সময় হাসনা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর নাড়ি কেটে ফেলেন চিকিৎসক। এরপরও এই হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে।

Source link

Related posts

পাবনার আমিনপুরে এক রাতেই তিনজনের লাশ উদ্ধার

News Desk

দেশে করোনা সংক্রমণের ৮০ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে

News Desk

আম্রপালির চাপে ফজলির কেজি ৩০ টাকা

News Desk

Leave a Comment