Image default
বাংলাদেশ

অদম্য সাহসিকতায় অপহরণকারীদের হাত থেকে ফিরে এলো স্কুলছাত্রী

প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় অপহরণের শিকার হয়েছেন সাথী (ছদ্মনাম) নামে নবম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী। মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণকারীরা তাকে অজ্ঞানও করে। কিন্তু জ্ঞান ফেরার পর সাথী যে সাহসিকতা দেখিয়ে অপহরণকারীদের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে ফিরে এসেছে তা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে।

সাথীর বাড়ি রাজবাড়ী গোয়ালন্দ পৌরসভা। রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেটের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ার স্থলের দূরত্ব ৫০০ গজ। পথিমধ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট নামক স্থান থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে এসে তাকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

অপহরণের বর্ণনা দিয়ে ১৪ বছর বয়সী সাথী বলে, ‘প্রাইভেটের পড়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হই। মাঝপথে গোয়ালন্দ রেলগেট পার হওয়ার পর স্থানীয় আব্দুল মান্নানের বহুতল ভবনের সামনে নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস আমার পথরোধ করে। মাইক্রোবাসে বোরকা পরা এক নারী ও তিন তরুণ ছিল। ওই নারী নাম জিজ্ঞাসা করে এবং আমার নাকের সামনে কাপড়ের মতো কী একটা ধরে আমাকে টান দিয়ে গাড়িতে তুলেই দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের দিকে রওনা দেয়। মাইক্রোবাসে ওঠানোর আগে কাঁধ থেকে স্কুল ব্যাগটি নিচে পড়ে যায়। আমাকে মাঝে রেখে ডানে ওই নারী এবং বামে এক তরুণ বসা ছিল। এরপর সে অচেতন হয়ে পড়ে।’

‘দুপুর ১২টার দিকে সাভার নবীনগরে মাইক্রোবাস থামায়। জ্ঞান ফিরলে দেখতে পাই, ওই নারী ডান হাত ধরে আছে। বাম পাশের তরুণ নেই, গাড়ির দরজা খোলা। ওই মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই ২০ মিনিট দৌড়ে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নিই। এ সময় স্থানীয় বয়স্ক এক ব্যক্তির কাছে ঘটনা খুলে বলি। চক্রের সদস্যরা কিছুদূর পথ পিছু নিয়ে কেটে পড়ে। পরে ওই ব্যক্তি বাড়িতে কল করে বিষয়টি জানান। রাতেই বাড়ি ফিরে আসি।’

নবীনগর পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার অনামিকা হেয়ার ড্রেসার সেলুনের স্বত্বাধিকারী স্বপন চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমি বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় ওই মেয়েকে আতঙ্কগ্রস্ত দেখে কী হয়েছে আমি জানতে চাইলাম। পরে বিষয়টি খুলে বললে, নম্বর নিয়ে তার বাবা-মাকে জানাই।’

সাথীর মা জানান, বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মেয়ে বাড়ি ফেরায় বোনের কাছে ফোন করে জানতে পারেন প্রাইভেট পড়তে যায়নি। তখন সবাই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে থাকলে রাস্তায় স্কুলব্যাগ পড়ে থাকার বিষয়টি জানতে পেরে চিন্তা বেড়ে যায়। তাৎক্ষণিক ৯৯৯-এ ফোন করে জানানো হলে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে জানানো হয়।

তার বাবা বলেন, ‘বাড়ি থেকে আমি ফোন পেয়ে দ্রুত বের হই। হঠাৎ এক নম্বর থেকে ফোন করে বলে, আপনার মেয়ে আমার কাছে আছে। আমি বলি আপনি আমার মেয়েকে দেখে রাখেন, আমি আসতেছি। আমি দ্রুত নবীনগর পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় পৌঁছে আমার মেয়েকে পাই। আমার একমাত্র মেয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে।’ কিন্তু দিনের বেলায় মহাসড়ক থেকে এভাবে তুলে নেওয়ায় তিনি শঙ্কায় আছেন।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরও আমি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।’

Source link

Related posts

রাজশাহী মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে দুই দিনে ৭ জনের মৃত্যু

News Desk

গাজীপুরে বেতন-বোনাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ

News Desk

আমন ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিনাজপুরের চাষিরা

News Desk

Leave a Comment