২৬ বছরেও হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত হয়নি
বাংলাদেশ

২৬ বছরেও হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা শনাক্ত হয়নি

উদীচী ট্রাজেডির ২৬ বছর আজ। দীর্ঘদিনেও এ হত্যাযজ্ঞে জড়িতরা শনাক্ত হয়নি।‌ উচ্চ আদালতে আপিল শুনানিতে ঝুলে আছে মামলার বিচারকাজ। ১৯৯৯ সালের এই দিনে (৬ মার্চ) যশোর টাউন হল মাঠে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন। আহত হয়েছিলেন আরও আড়াই শতাধিক মানুষ।

এদিকে, ৬ মার্চ ‘যশোর হত্যাকাণ্ড দিবস’ হিসেবে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী দিনটি পালন করে আসছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব জানান, এবার ‘সাথীদের খুনে রাঙা রাজপথ আমরা ছাড়বো না…’ স্লোগানে শহীদদের স্মরণ করছে উদীচী যশোর। আজ বৃহস্পতিবার সকালে টাউন হল ময়দানে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নিজস্ব কার্যালয়ে স্মরণসভা এবং সন্ধ্যায় দশ শহীদ স্মরণে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আলোক প্রজ্জ্বালনের আয়োজন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ গভীর রাতে সম্মেলন শেষে অনুষ্ঠান পর্ব চলাকালে বোমা হামলায় নিহত হন দর্শক-শ্রোতা সন্ধ্যা রাণী ঘোষ, যশোর উদীচীর কর্মী শেখ নাজমুল হুদা তপন, স্বর্ণশিল্পী বাবুল সূত্রধর, উদীচী কুষ্টিয়ার কর্মী রামকৃষ্ণ রায়, পাম্পমিস্ত্রি ইলিয়াস মোল্লা, শ্রমিক নুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া লালন একাডেমির শিল্পী শাহ আলম, কুষ্টিয়া উদীচীর কর্মী রতন কুমার বিশ্বাস, শাহ আলম মিলন এবং সৈয়দ বুলু। আহত হন আরও আড়াই শতাধিক দর্শক-শ্রোতা। পঙ্গু হয়ে যান অন্তত পাঁচ জন।

সেদিনের কথা বলতে গিয়ে উদীচী যশোরের সদস্য সুকান্ত দাস জানান, মঞ্চে তখন অনুষ্ঠান চলছিল। মঞ্চের দক্ষিণ পাশে খুঁটিতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন তিনি। খুঁটির গোড়ায় মাটিতে বোমা পোঁতা ছিল। প্রথম বোমাটি বিস্ফোরিত হলে তিনি ডান পা হারান। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার ডান হাত। ঘটনার সময় তিনি স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। একটি নকল পা লাগিয়ে তিনি চলাফেরা করেন। ডান হাতটা ঠিকমতো কাজ করে না।

সুকান্ত দাস বলেন, ‘কেউ না কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাতে ১০ জন মারা গেছেন। পাঁচ জন পঙ্গু। আহত হয়েছেন অনেক মানুষ। সরকারের দায়িত্ব, এটা কারা ঘটিয়েছে তাদের খুঁজে বের করা। কিন্তু সেটা হয়নি। ২৫ বছর ধরে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে আসছি। এখনও বিচার চাইতে হচ্ছে।’

উদীচীর সম্মেলনে সেই বোমা হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরবর্তী সময়ে অভিযোগ গঠনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তরিকুল ইসলামকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন উচ্চ আদালত। ২০০৬ সালের ৩০ মে মামলার রায়ে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেন যশোরের বিচারিক আদালত। মামলাটির রায়ের পর সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে। উচ্চ আদালত আসামিদের নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। আসামিরা নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন। এরপর মামলাটির আপিল শুনানি আর হয়নি।

জানতে চাইলে যশোর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘দুই মাস হলো পিপি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলার মামলার কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। বিষয়টি আমি ওয়াকিবহাল নই।’

Source link

Related posts

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম এখন দেশেই

News Desk

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চলে গেলেও রেখে গেছে ক্ষত চিহ্ন

News Desk

বরকে রেখে পালালো সহযাত্রীরা

News Desk

Leave a Comment