সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে
বাংলাদেশ

সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে

সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই কুশিয়ারা পাটলাইসহ সকল নদ-নদীর পানি বেড়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতেও ভাটির উপজেলা তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশার পানি বেড়েছে অনেক। হাওর এলাকার নদ-নদীতে মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে হু হু করে।

তাহিরপুর উপজেলার রতনশ্রী, গোলাবাড়ি, মান্দিয়াতা, জয়পুরসহ টাংগুয়া ও মাটিয়ান হাওর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে গ্রামের ছোট ছোট খালগুলো পরিপূর্ণ।

ঢলের পানিতে ভেসে আসা পলির কারণে হাওরের পানির রঙও বদলেছে। পানিশূন্য হাওরগুলোতে বিভিন্ন স্লুইসগেট রেগুলেটর ও বাঁধের ফাঁক-ফোকর দিয়েও পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

মান্দিয়াতা গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, ‘এখন হাওরে পানি ঢুকলে মাছের উৎপাদন বাড়বে। হাওরে কোনও ফসল নেই। তাই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টির কারণে ধান-চাল শুকাতে সমস্যা হচ্ছে।’

বালিজুড়ি গ্রামের কৃষকরা জানান, আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে তাদের বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি সরে গেলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হবে না।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর রাবারড্যাম উপচে খরচার হাওরের উঁচু জমিতে পানি প্রবেশ করছে।

দোয়ারাবাজারে টানা তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা আকস্মিক ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও লোকালয়সহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, ধূমখালি ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন হাওর, খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।

সীমান্তবর্তী বাংলাবাজার, লক্ষীপুর, বগুলা, নরসিংপুর, সুরমা, দোহালিয়া, পান্ডারগাঁও, মান্নারগাঁও ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা, মাঠঘাট, আউশ জমিতেও পানি ঢুকছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মাঠের অবশিষ্ট বোরো ফসল ও রবিশস্য উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে

মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটের শঙ্কায় আছেন মৎস্য খামারিরা। গত বছরেই চার দফা বন্যায় ভেসে গিয়েছিল এখানকার শতাধিক খামারের কোটি টাকার মাছ ও রেনু।

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, পানি বাড়লেও কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের প্রশাসনিক তৎপরতা থাকবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সদর বিশ্বম্ভরপুর দোয়ারাবাজার উপজেলার কিছু জমিতে পানি প্রবেশের খবর পেয়েছি।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহরুল ইসলাম জানান, উজানে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমেছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে।

Source link

Related posts

পর্যটকে মুখরিত অপরূপা বান্দরবান  

News Desk

দিনের আলোতেই দখল হচ্ছে ‌‘মরাপদ্মা’!  

News Desk

ময়লা-আবর্জনার নগরী ময়মনসিংহ

News Desk

Leave a Comment