Image default
বাংলাদেশ

লোকসানের মুখে মাগুরার লিচুচাষিরা

মাগুরার দশ গ্রামে শতাধিক লিচুচাষির স্বপ্ন ম্লান হতে শুরু করেছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথমদিকে লিচুর ভরা মৌসুম। এ সময় মাগুরা সদরের হাজীপুর, হাজরাপুর, মির্জাপুর, ইছাখাদা, সত্যপুর, শিবরামপুর, নড়িহাটির প্রতিটি লিচুবাগানে উৎসব শুরু হয়ে যায়।

লিচুচাষিরা জানান, ভরা মৌসুমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানের ব্যাপারিরা মাগুরায় আসেন লিচু সংগ্রহ করতে। আবার কোনো কোনো ব্যাপারিেএক মাস আগেই লিচু সংগ্রহের জন্য বাগান মালিকদের আগাম টাকা দিতেন। প্রতি বছর চাষিরা খরচ বাদে লাভ করতেন লাখ লাখ টাকা। কিন্তু এবার অতিরিক্ত খরা, প্রচণ্ড তাপদাহ ও নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মাগুরায় ফলন বিপর্যয়ের ফলে উৎপাদন খরচ না উঠার আশঙ্কা করছেন অনেক চাষি।

কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে এবার জেলায় মোট লিচুর আবাদ হয়েছে ৫৮৮ হেক্টর জমিতে। চাষিরা এবার স্থানীয় জাত হাজরাপুরী, মোজাফফরী, বোম্বাই, চায়না-৩সহ বিভিন্ন জাতের লিচু আবাদ করেছেন। জেলার চার উপজেলার মধ্যে সদরে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়ে থাকে। খরা ও তীব্র তাপদাহে এবার সদরের বিভিন্ন বাগানের লিচু ফেটে যাচ্ছে।

মাগুরা সদরের শিবরামপুর গ্রামের আকামত নামে এক ব্যক্তি জানান, এবার দশ বিঘায় তার ছয়টি বাগানে মোট ৬শ’ লিচু গাছ রয়েছে। সব গাছে এবার মুকুল আসেনি। কিছু কিছু গাছে মুকুল এসেছে। প্রতিটি গাছে ফল না থাকায় তার আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। পাঁচ লাখ টাকা লিজ নিয়ে চাষ করেন তিনি। মুকুলশেষে ফল যখন একটু একটু বড় হতে থাকে, ঠিক তখনই বৈশাখের তাপদাহ বাড়তে থাকে। ওই সময় তিনি প্রতিটি গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু প্রচণ্ড তাপে লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়।

মাগুরা সদরের ইছাখাদা গ্রামের জিয়ারুল নামে একজন বলেন, ‘আমার দুই শতাধিক লিচুর গাছ রয়েছে। বাগান রয়েছে তিনটি। এবার বাগানের প্রতিটি গাছে মুকুল আসেনি। প্রচণ্ড গরমে এবার প্রতিটি গাছের অধিকাংশ লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। গত বছর ফলন ভালো হওয়ায় আর্থিক সংকট হয়নি। কিন্তু এবার লিচুর ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। এই ইছাখাদা গ্রামকে বলে লিচুর গ্রাম। কিন্তু এবার বাগানের প্রতিটি গাছে তুলনামূলক লিচু না থাকায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। আমার এবার তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বিক্রি হয়েছে মাত্র দুই লাখ টাকার লিচু।’

ঢাকা থেকে আসা লিচুর ব্যাপারি মহসিন ও হিমেল জানান, করোনার কারণে লিচুর বাজার মন্দা। মাগুরা থেকে ঢাকায় ফল নিতে খরচ খুবই বেশি। এখন বাগান থেকে লিচু কিনে ব্যাপারিদের খরচ উঠছে না।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্তকুমার প্রামাণিক বলেন, ‘এবার নির্দিষ্ট সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও প্রচণ্ড তাপদাহে অনেক বাগানের লিচু নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা চাষিদের নিয়মিত ফ্রেস পানি দিয়ে সেচ ও গাছের গোড়ায়, পাতায় এবং ফলে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি। ’

Related posts

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে সিইসি হুদার কমিশন

News Desk

কুমিল্লায় ছাত্রলীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ স্থান বদলালেন আন্দোলনকারীরা

News Desk

‘বহু অভিযান চালিয়েছি, কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি’

News Desk

Leave a Comment