Image default
বাংলাদেশ

পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব

পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব হলো বিজু, সাংগ্রাই ও বৈসুক। তিন পার্বত্য জেলায় উৎসবমুখর পবিবেশে শুরু হয়েছে এই উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন নিয়েই এ উৎসব।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন জনপদে এ উৎসবকে ঘিরে আয়োজন হয় ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন রকমের খেলা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতি বছর চৈত্র মাস আসতেই পার্বত্য অঞ্চলে শুরু হয় ‘বৈসাবি’ উৎসবের আয়োজন।

আজ সোমবার (১২ এপ্রিল) চাকমা সম্প্রদায়ের ফুল বিজু। এই দিনে ভোরে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের খবংপুজ্যা গ্রামের চরের তরুণ-তরুণী, শিশুরা ফুল সংগ্রহ করে। এরপর চেঙ্গী নদীতে সেই ফুল ভাসিয়ে দিয়েছে। পুরাতন বছরের সব গ্লানি দুঃখ মুছে গিয়ে, নতুন বছরের শুভ কামনায় নদীতে ফুল দিয়ে তারা উৎসবটি পালন করে। এরপর প্রত্যেকে নিজ নিজ বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও ফুল দিয়ে সাজাবে।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) হবে তাদের মূল বিজু উৎসব। এই দিনে প্রতিটি বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন হবে। অতিথিদের নানা রকমের সবজি দিয়ে ‘পাচন’ তৈরি করে পরিবেশন করা হবে। আরও থাকে সেমাই, পিঠা ইত্যাদি মুখরোচক খাবারের আয়োজন। গরু-মহিষকে স্নান করিয়ে এদের গলায় পাহাড়ি কাঁচা ফুলের মালা পরিয়ে দেয়। ধূপ, চন্দন ও প্রদীপ জ্বেলে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এভাবে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বিজু উৎসব বছরের শেষ দিনে মহাসমারোহে উদযাপন করে।

এরপর বুধবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নতুন বছর তাদের গজ্যাপুজ্যা দিন। এদিন তারা বিশ্রাম করেন। ছোটরা বড়দের নমস্কার করে এবং আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। সন্ধ্যায় সবাই স্থানীয় বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে ধর্ম অনুশীলনে মশগুল থাকে। ভিক্ষুসংঘ কর্তৃক ধর্মদেশনা শুনে অনাগত দিন সুখেশান্তিতে কাটানোর জন্য বিশেষ প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করে। এভাবে গজ্যাপজ্যা দিনের পরিসমাপ্তি ঘটে। এই দিনেও প্রত্যেক বাড়িতে খানাপিনার উৎসব চলে।

মহামারি করোনার কারনে বড় করে উৎসবটি পালন না হলেও নিজেদের মধ্যেই আনন্দে মেতে উঠছেন পাহাড়িরা। অন্যান্য বছর উৎসবটি দেখতে পাহাড়ে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। তবে গত বছর থেকে করোনা মহামারির কারণে উৎসবটি সীমিত পরিসরে পালন করছেন পাহাড়ীরা।

Related posts

সিরাজগঞ্জে আরও ২০০ টন তরল অক্সিজেন পৌঁছাল

News Desk

যেসব কারণে সড়কপথে সুন্দরবন যাওয়া পর্যটক কমছে

News Desk

কুমিল্লায় এসআইয়ের লাশ উদ্ধার

News Desk

Leave a Comment