‘নদীতে ৪ বার ঘর গেলেও মেলেনি সহায়তা, তালিকায় বিত্তবানদের নাম’
বাংলাদেশ

‘নদীতে ৪ বার ঘর গেলেও মেলেনি সহায়তা, তালিকায় বিত্তবানদের নাম’

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতির ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন তালিকায় নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের জায়গায় এলাকার বিত্তবান ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম লিপিবদ্ধ হয়েছে। উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফর শিকদার এই নয়-ছয়ে জড়িত বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। 

এ ঘটনায় সোমবার (২৩ মে) ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মো. গফফার মিয়া নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। গফফার মিয়া উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামের মো. আজাহার মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অতিদরিদ্র ও দুস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়নে তালিকা হালনাগাদ করার নির্দেশনা আসে। সে অনুযায়ী সম্প্রতি বুড়াইচ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফর শিকদার ৪২ জনের একটি নামের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন।

কিন্তু তালিকায় প্রণয়নে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম সম্পৃক্ত নির্দেশনা কোনোভাবে অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এ তালিকায় বিত্তবান, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, সরকারি কর্মচারী, একই পরিবারের একাধিক নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এমনকি নদীতে যাদের বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি এমন ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম তালিকায় দেওয়া হয়নি।  

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত আ. গফফার মিয়া বলেন, ‘চার বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। এ পর্যন্ত ভাঙনের কারণে সরকারি কোনও সহায়তা পাইনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি সাহায্যের তালিকায় থাকে যাদের গোলায় ধান, গোয়ালে গরু ও নগদ অর্থ আছে। আমার বাড়িতে এ পর্যন্ত একটা ঘরও দিতে পারি নাই। আমি ঋণের ভারে জর্জরিত। কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও পড়াতে পারিনি। অপর মেয়েকেও স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে। একমাত্র ছেলেকে দুই বছর বিরতির পরে স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। অথচ নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় আমার নাম নেই। তালিকায় বিত্তবান, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, সরকারি কর্মচারী এবং একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে।’

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাফর শিকদার বলেন, আমি তালিকায় কোনও অনিয়ম করিনি। আমি তালিকা প্রণয়ন করে উপজেলায় জমা দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন তদন্ত করে যাদের নাম ভালো মনে করবে তাদেরকে সহায়তা দেবে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৪২ জনের একটি নামের তালিকা পেয়েছি। তবে এই তালিকার সবাই সরকারি সহায়তা পাবে না। মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে করেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে। 

Source link

Related posts

চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে ২৫০ মৃত্যু, ৩৬ সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন হয়নি

News Desk

সুন্দরবন ঢাল হয়ে রক্ষা করায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি মোংলায়

News Desk

দিনের আলোতেই দখল হচ্ছে ‌‘মরাপদ্মা’!  

News Desk

Leave a Comment