ডিম ছাড়ছে না হালদার মা মাছ, ভারী বৃষ্টির অপেক্ষা
বাংলাদেশ

ডিম ছাড়ছে না হালদার মা মাছ, ভারী বৃষ্টির অপেক্ষা

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের অপেক্ষায় আছেন চট্টগ্রামের হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারীরা। প্রতি বছর এ সময়ে নদীতে ডিম ছাড়ে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউস। মূলত এপ্রিল ও মে মাসের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মা মাছ ডিম ছাড়লেও চলতি বছর এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ডিম ছাড়েনি।

গত সপ্তাহে দুই দফায় নদীতে ডিম দিয়েছিল মা মাছ। এর মধ্যে শনি ও রবিবার (১৪ ও ১৫ মে) দুই দফায় সাড়ে তিন হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ হয়। এসব ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ চলছে হ্যাচারিগুলোতে।

এ প্রসঙ্গে হালদা বিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়নি। এই কারণে মা মাছ ডিম ছাড়েনি বলে মনে হচ্ছে। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত কার্প জাতীয় মাছ পূর্ণিমা তিথিতে ভারী বৃষ্টিসহ বজ্রপাত হলে নদীতে ডিম ছাড়ে। এ বছর ডিম ছাড়ার জন্য ছয়টি জো ছিল। এর মধ্যে তিনটি চলে গেছে। তিনটির মধ্যে দুটিতে ডিম দিয়েছে। যেগুলোকে আমরা নমুনা ডিম বলছি। এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কেজি। আরও তিনটি জো আছে। ২৫ মে থেকে শুরু হওয়া জো থাকবে সাত দিন। এ সময় ভারী বৃষ্টি হলে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ।’

তিনি আরও জানান, এবার যে দুই দফা ডিম দিয়েছে এর মধ্যে নদীতে ডিম সংগ্রহ করা হয় ৩১৫টি নৌকায়। এতে অংশ নিয়েছিলেন ৬৫০ জন ডিম সংগ্রহকারী। তবে সংগ্রহকারীরা পর্যাপ্ত ডিম না পেয়ে হতাশ। কোনও নৌকা এক কেজি, কেউ পেয়েছে ৫০০ গ্রাম কিংবা ২০০ গ্রাম করে ডিম।

রাউজান উপজেলার উরখিরচর ইউনিয়নের খলিফার ঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ডিম সংগ্রহের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি। এখন পর্যন্ত মা মাছ ভালোভাবে ডিম ছাড়েনি। আশা করছি, সামনের জোতে ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি পাহাড়ি ঢল নামলে ডিম ছাড়বে মা মাছ।’

চলছে রেণূ ফোটানোর কাজ

এদিকে, গত এক সপ্তাহে দুই দফায় সংগ্রহ করা ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ চলছে হালদা পাড়ের দুই উপজেলা রাউজান ও হাটাহাজারীতে। হাটহাজারীর তিনটি এবং রাউজানের একটি সরকারি হ্যাচারি ছাড়াও আইডিএফের একটি হ্যাচারি ছাড়াও ১৭৬টি মাটির কোয়াতে ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ চলছে। হ্যাচারিগুলোতে শুক্রবার চার দিন বয়সী হালদার রেণুর কেজি বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

আহমেদ ছফা নামে এক ডিম সংগ্রহকারী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, দিন যতই যাবে রেণুর সাইজ তত বেশি বড় হবে। রেণুর সাইজ বাড়লে দাম কমবে। এবার ডিম কম পাওয়ায় রেণুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি।

এ বছর দুই দফায় সাড়ে তিন হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ হয়। এর আগের ডিম সংগ্রহ হয়েছিল আট হাজার কেজি। ২০২০ সালে হয়েছিল ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি।

Source link

Related posts

করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু খুলনা-রাজশাহীতে

News Desk

সেই টিকটক হৃদয়ের ৫ সহযোগী গ্রেফতার

News Desk

চট্টগ্রামে করোনায় আরও ৮ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৯৮

News Desk

Leave a Comment