Image default
বাংলাদেশ

চলে গেলেন ‘লাল বাড়ির সাদা মানুষ’ অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি

নিজের জমানো সব অর্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দান করা মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি মারা গেছেন। করোনা-পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন বিভাগটির অধ্যাপক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

সোমবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়ছিল ৮৫ বছর।

মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বনানী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোক ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।

 

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্যার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কিছুদিন পর করোনামুক্ত হয়েছিলেন। করোনামুক্ত হওয়ার পর শরীরে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন তিনি। মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে বনানী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। ’

১৯৯৮ সালে অধ্যাপক মোহাম্মদ শফির হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের কার্যক্রম। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ বায়োলজি বিভাগে তিন মাস শিক্ষকতা করেন। এরপর যশোর এমএম কলেজ ও চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে প্রাণিবিদ্যা পড়ান তিনি। ১৯৬৬ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দেশে ফিরে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। পরের বছর প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি। ৩২ বছরের কর্মময় জীবন শেষে ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন তিনি।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অর্থাভাবে ১৪ বছর ধরে একতলায় আটকে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ভবন নির্মাণের কাজ। ক্লাসরুম সংকট, ছোট গবেষণাগার ছাড়াও ঠিকমতো জায়গা হতো না শিক্ষকদের। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক মাহাম্মদ শফি। সারা জীবনের সঞ্চয়ের প্রায় ৭০ লাখ টাকা তিনি দান করেন বিভাগের ভবন নির্মাণ কাজে।

এদিকে এক শোক বার্তায় উপাচার্য অধ্যাপক মা আখতারুজ্জামান বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি ছিলেন একজন প্রখ্যাত মৎস্যবিজ্ঞানী ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। তিনি বিভাগের অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নে বিপুল অঙ্কের আর্থিক অনুদান প্রদান করে এক মহতী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। মৎস্যবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় অসাধারণ অবদানের জন্য গুণী এই অধ্যাপক স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

Related posts

প্রাণিসম্পদ প্রদর্শণী অনুষ্ঠিত,সুন্দরগঞ্জ

News Desk

বৃষ্টির দেখা নেই, আমন রোপণে দুশ্চিন্তায় কৃষক

News Desk

২৫ বছরেও হয়নি স্থায়ী বেড়িবাঁধ, বর্ষা এলেই আতঙ্কে থাকেন তারা

News Desk

Leave a Comment