Image default
বাংলাদেশ

খোলা আকাশের নিচে পুড়ে যাওয়া ৫২ ঘরের মানুষরা

নীলফামারীতে আগুনে পুড়ে গেছে ৫২টি ঘর। দগ্ধ হয়েছেন দুই নারী। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ২৩ পরিবারের মানুষ। রবিবার (১৩ ফেব্রয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আহাজারি। কৃষিশ্রমিক সহিদুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৫৫) নিজের ভিটায় দাঁড়িয়ে বিলাপ করছিলেন।

দগ্ধ হওয়া দুই নারী হলেন– শরিফুলের স্ত্রী শাবানা বেগম (২৭) ও তার মেয়ে শান্তনা আক্তার (৩)। তারা নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ওই গ্রামের ইজিবাইক চালক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাতে বাড়ি ফিরছিলাম। সে সময় শরিফুলের বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখি। বাড়ি পৌঁছে দেখি আমার তিনটা ঘরে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এ সময় পাশে থাকা আমার একটি মুদি দোকানও পুড়ে গেছে।’

প্রতিবেশী গোলাম আজম বলেন, ‘বাড়ির লোকজনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা আসার আগেই চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে দমকলবাহিনী আসার আগেই ৫২টি ঘর পুড়ে যায়।’

অপর প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল ওয়াজেদ বলেন, ‘শরিফুলের ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি শ্রমিক। তারা জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজে যাওয়ায় এলাকাটি ছিল প্রায় পুরুষশূন্য। এ কারণে আগুন নেভানোর জন্য তেমন লোকজন পাওয়া যায়নি।’

নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লাগতে পারে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার ওপরে হতে পারে।’

পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

তিনি জানান, রাতেই জেলা প্রশাসক খন্দাকার ইয়াসির আরেফীন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে রাতেই উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুই হাজার করে টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।

এদিকে, সোমবার স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা, শুকনো খাবার, দুটি করে কম্বল, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এক বান্ডিল করে ঢেউটিন, ১০ কেজি করে চাল, তেল, ডাল, আলু, শাড়ি ও লুঙ্গি এবং স্থানীয় ঠিকাদার মিজানুর রহমান প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ কেজি চাল ও দুটি করে কম্বল বিতরণ করেন।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে প্রাথমিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। দ্রুত ঘরবাড়ি নির্মাণে সহযোগিতা করা হবে।’

 

 

Source link

Related posts

ময়মনসিংহ মেডিক্যালে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের গ্রুপিং, সমস্যা ‘বহিরাগতকে’ নিয়ে

News Desk

ফুচকা খেতে গিয়ে শিশু নিখোঁজ, লাশ মিলল খালে

News Desk

ঘোড়াঘাটের ইউএনও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি রবিউলের ১৩ বছরের কারাদণ্ড

News Desk

Leave a Comment