ঈদে ১,৫০০ কোটি টাকার বিক্রির আশা চট্টগ্রামের টেরিবাজারের ব্যবসায়ীদের
বাংলাদেশ

ঈদে ১,৫০০ কোটি টাকার বিক্রির আশা চট্টগ্রামের টেরিবাজারের ব্যবসায়ীদের

উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে চট্টগ্রামে থান কাপড় বিক্রির জন্য বিখ্যাত শত বছরের পুরোনো টেরিবাজারে। থান কাপড়ের পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিতি এ বাজার। শুধু থান নয়, এখন মিলছে সব ধরনের প্রয়োজনীয় কাপড়। গত এক দশকে টেরিবাজারে গড়ে উঠেছে অর্ধ শতাধিক মার্কেট। যেখানে মিলছে নারী-পুরুষ ও শিশুদের যাবতীয় পোশাক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা। ক্রেতার ভিড়ে ব্যবসায়ীদের যেন এখানে দম ফেলার ফুরসত নেই। এবার টেরিবাজারে অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকার বিক্রির আশা করছেন ব্যসায়ী সমিতির নেতারা।

এ বাজারে পাইকারি কাপড়ের পাশাপাশি রয়েছে খুচরায় বিক্রির প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে আছে অর্ধশতাধিক শপিং মল। রোজার শুরু থেকে এ বাজার যেন উৎসবে রূপ নিয়েছে। প্রতিটি দোকান সাজানো হয়েছে বাহারি পোশাকে। দেশি-বিদেশি নিত্য নতুন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি-পিচ, পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, সালোয়ার কামিজ, গহনা, জুতা, কসমেটিকসসহ সব ধরনের পোশাক ও প্রসাধনী সামগ্রীতে ঠাসা এই বাজার। বিশেষ করে নারীদের জন্য ফ্যাশনেবল শাড়ি, থ্রি-পিস এবং বাহারি ডিজাইনের পোশাকের চাহিদা এখানে বেশি। চীন, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সিকোয়েন্স পাঞ্জাবি, লিনেন, জামদানি, সুতি, শিফন ও প্রিন্ট কাপড়ের পাশাপাশি দেশি মানের পোশাকও পাওয়া যাচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেরিবাজারে গত এক দশকে প্রায় অর্ধশতাধিক শপিং মার্কেট গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মাসুম ক্লথ স্টোর, বঁধুয়া শপিং, চিটাগাং শাড়ি হাউজ, মেগামার্ট, সানা ফ্যাশন, রাজস্থান, রাজপরী, জারা শপ, আলিশা, জাবেদ ক্লথ স্টোর, বৈঠক বাজার, ভাসাবি, মনে রেখ, শাহ আমানত, পরশমনি, শিরমনি, রাঙ্গুলি, ফেমাস, হারুন অ্যান্ড ব্রাদার্স, মল টুয়েন্টি ফোর, মোহাম্মদীয়া, হ্যালো ফ্যাশন, গোল আহমদ, নিউ রাজস্থান, মৌচাক, আলমগীর, বাগদাদ অ্যাম্পোরিয়াম, নিউ আজমি ইত্যাদি বেশ পরিচিত।

টেরিবাজারে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা কাশবি আক্তার বলেন, ‘এখানকার কিছু মার্কেটে একসঙ্গে সব প্রয়োজনীয় কাপড় পাওয়া যায়। এ কারণে কেনাকাটা করতে এসেছি। দাম ঠিক আছে।’

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শবে বরাতের পর থেকে টেরিবাজারে এবার বেচাকেনা জমে উঠেছে। এ বাজারে ৯০টি ছোট-বড় মার্কেট আছে। এসব মার্কেটে দুই হাজারের বেশি দোকান আছে। যার মধ্যে ৯০ শতাংশ দোকানই কাপড়ের। এবার অন্তত এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার বিক্রির টার্গেট রয়েছে। রোজার শুরু থেকে এখানে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে এবার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’

ঈদে ১,৫০০ কোটি টাকার বিক্রির আশা চট্টগ্রামের টেরিবাজারের ব্যবসায়ীদের তিনি বলেন, টেরিবাজারের সরু রাস্তায় যানজট নিরসন এবং নারী ও শিশু ক্রেতাদের সুবিধার জন্য অটোরিকশা ও ট্রাক চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল মনছুর বলেন, ‘চট্টগ্রামের পাইকারি কাপড়ের জন্য টেরিবাজার প্রসিদ্ধ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখান থেকে কাপড় কিনে নিয়ে যান খুচরা ব্যবসায়ীরা। রমজান শুরুর আগে পাইকারি বিক্রি ছিল বেশি। তখন ছিল মূল বেচাকেনা। এছাড়াও ১৫ রমজান পর্যন্ত থান কাপড় যেমন পাঞ্জাবি, থ্রি-পিচসহ বিভিন্ন থান কাপড়ের ব্যবসা ছিল জমজমাট। এখন রেডিমেড পোশাক, জুতা, প্রসাধনসহ অন্যান্য কাপড় বিক্রি হচ্ছে বেশি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছেন।’ 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘টেরিবাজারে সবসময় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

Source link

Related posts

বদলে যাবে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থা

News Desk

ঠাকুরগাঁওয়ে ২৮৮০ পিস ইয়াবাসহ ২ জন আটক

News Desk

অসময়ে ভাঙছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়, দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা

News Desk

Leave a Comment