আশ্রয়কেন্দ্র ফাঁকা, পাহাড়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস
বাংলাদেশ

আশ্রয়কেন্দ্র ফাঁকা, পাহাড়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস

পাহাড়ি অঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরে টানা মাঝারি মাত্রায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। টানা বর্ষণের কারণে প্রাণহানি রোধে সচেতনতায় মাইকিং এবং আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে আগ্রহ নেই পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শহরে ৩১টি পয়েন্টে চার হাজার পরিবারের আনুমানিক ১৫ হাজার মানুষ পাহাড়ে পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাস করছে। ২০১৭ সালে জেলায় পাহাড় ধসে ১২০ এবং ২০১৮ সালে ১১ জনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের পরে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আরও ৫শ’ নতুন পরিবার বসতি স্থাপন করেছে।

এদিকে, বুধবার থেকে রাঙামাটিতে থেমে থেমে চলছে মাঝারি বর্ষণ। ফলে বাড়ছে ভূমিধসের শঙ্কা। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় করা হচ্ছে মাইকিং। এর পরেও শহরের ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ফাঁকা পড়ে আছে।

সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে বহু মৃত্যুর ঘটনার পরেও সেখানে বসবাস করছেন নিম্ন আয়ের এই মানুষগুলো। মৃতুঝুঁকি জেনেও ঘর ছাড়তে রাজি নন তারা। বরং ঘরের পাশে ধসে পড়া মাটি সরিয়ে আবাসস্থল রক্ষা করার প্রচেষ্টা তাদের। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শুক্রবার জেলায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতেও সেখানে অবস্থান করছেন তারা।

যেকোনও সময় দেসে পড়তে পারে পাহাড় রূপনগর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকালে আমার বোনের ঘরের ওপরে গাছসহ মাটি ধসে পড়ে। সকাল থেকে মাটি সরানোর কাজ করছি। প্রতিবছর বৃষ্টি হলে মাটি পড়ে। কিন্তু যাওয়ারও কোনও জায়গা নেই। তাই খেটে খাওয়া মানুষজন ঝুঁকি নিয়েই এখানে থাকে।’

আরেক বাসিন্দা খাদিজা বেগম বলেন, ‘বৃষ্টি এখনও বেশি মনে হচ্ছে না। বেশি হলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো। আশ্রয় কেন্দ্র গেলে কষ্ট। সকালের খাবার দুপুরে, দুপুরের খাবার রাতে, আর রাতের খাবারের ঠিক থাকে না।’

নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে স্থানীয়দের সচেতন করা হচ্ছে রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে টানা মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। তাই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা রূপনগর, শিমুলতলীসহ বেশ কিছু এলাকায় মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে স্থানীয়দের সচেতন করছি। তবে মানুষের মধ্যে কোনও সাড়া পাচ্ছি না। আশা করছি, মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসবেন।’

রাঙামাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বীন আল জান্নাত বলেন, ‘টানা বর্ষণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে চেষ্টা করছি। প্রাণহানি রোধে আশ্রয় কেন্দ্রের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।’

Source link

Related posts

শেষ হলো উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোট, চলছে গণনা

News Desk

মাংসের কেজি ৩০০ টাকা

News Desk

বোয়ালখালীতে সন্ত্রাসীদের হাতে কলেজ ছাত্র খুন

News Desk

Leave a Comment