বঙ্গ তনয়া তিনিই। তাই বাংলা থেকে যতই দূরে থাকুক না কেন মনে প্রানে সংস্কৃতিতে তিনি বাঙালি। আর বাঙালির সুখে-দুঃখে আপদে-বিপদে এবং রণে বনে জলে জঙ্গলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের থেকে বড় ভরসা কিচ্ছু নেই। কারণ তিনি শুধু বাঙালি নয় পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের প্রতিটা মনের কোণের এমন কোন অনুভূতি কি আছে যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় ধরা পড়েনি? অন্তরের অন্তস্থলে জমে থাকা সমস্ত ইমোশনের আঁধার তাঁর রচিত বিভিন্ন কবিতা গল্পে উপন্যাস।
জীবনের একগুচ্ছ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবড়ো খেবড়ো পথের শেষে তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারস্থ হলেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। সুশান্ত সিং রাজপুত এর মৃত্যুর পরে রিয়া চক্রবর্তীকে যেভাবে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সুশীল সমাজ। অপরাধীর অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগেই তাকে সুশান্ত সিং রাজপুত এর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে দিয়েছিল সমাজ। সেই সময়ে তথাকথিত বউ অনেক বড় বড় মিডিয়া ও তাদের লেখায় এবং ইন্টারভিউতে প্রায় বিধ্বস্ত করে ফেলেছিল রিয়া চক্রবর্তীকে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও রিয়া চক্রবর্তী কে সুশান্ত সিং রাজপুত এর মৃত্যুর জন্য দায়ী করতে পারেনি আদালত। তবে যেহেতু এনসিভিত স্ক্যানার এর আন্ডারে সুশান্ত সিং রাজপুত এর মৃত্যুর তদন্ত চলে আসে তাই মাদক কান্ডে মাদকদ্রব্য সাপ্লাই করার অভিযোগে রিয়া চক্রবর্তী এবং তার ভাই সৌভিক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়। এক মাস জেল খাটেন রিয়া। তার পরেও তাঁকে ছেড়ে কথা বলেনি সমাজের অনেক ব্যক্তিত্বরাই। প্রায় এক ঘরে করে দেওয়া হয় রিয়া চক্রবর্তীর পরিবারকে। অমিতাভ বচ্চন এবং ইমরান হাশমি অভিনীত চেহরের পোস্টার থেকে রিয়া চক্রবর্তীর ছবিও সরিয়ে দেওয়া হয়।
নানা প্রতিকূলতাকে সামলে রিয়া চক্রবর্তী আশ্রয় নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি ‘সঞ্চয়িতা’র। ‘আরাে আঘাত সইবে আমার, সইবে আমারো।আরাে কঠিন সুরে জীবনতারে ঝঙ্কারো’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বাণীগুলি স্মরণ করেই জীবনের বাধা কাটিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন রিয়া চক্রবর্তী। ইনস্টাগ্রামে সঞ্চয়িতা হাতে গীতালঞ্জলির একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরলেন অভিনেত্রী। এই পোস্টের সঙ্গে হ্যাশট্যাগে রিয়া লেখেন, ‘কিপিং দ্য ফেথ’। তবে এই বিশ্বাস সমাজে মানুষে, না বিচারব্যবস্থায় প্রশ্ন এখনো অজানা।