Image default
প্রযুক্তি

মঙ্গলে হেলিকপ্টারে ওড়ানো স্থগিত করলো নাসা!

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোবট যান ‘পারসেভারেন্স’ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান করে যাচ্ছে। আজ সেই ল্যান্ডার থেকে মঙ্গলের আকাশে হেলিকপ্টার ‘ইনজেনুইটি’ ওড়ানোর কথা ছিলো। যাতে করে আকাশ থেকে মঙ্গলের আরো বড় এলাকাজুড়ে নজরদারি চালাতে পারে নাসা। কিন্তু গত শুক্রবার সেটির পরীক্ষার সময় ডানায় সমস্যা দেখতে পেয়ে, সেই পরিকল্পনা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রাখতে হয়েছে। এখন তথ্য ঘেঁটে সমস্যার উৎস ও সমাধান খুঁজছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।

এক বিবৃতিতে নাসা জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় ইনজেনুইটি নামের হেলিকপ্টারটির ক্ষতি হয়নি।

সাধারণ চোখে দেখলে ভিনগ্রহে হেলিকপ্টার ওড়ানোর কাজটি আহামরি কিছু নয় বলে মনে হতে পারে। কিন্তু প্রথমবার কাজটি করা প্রায় ততটাই কঠিন, যতটা কঠিন ছিল বিশ্বের প্রথম এরোপ্লেনটি ওড়ানো। ১৯০৩ সালে উড়োজাহাজ উড়িয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন দুই ভাই অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট। সেই সফল প্রয়াসের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নাসা মঙ্গলে পাঠানো প্রথম কপ্টারে রেখে দিয়েছে রাইট ভাইদের তৈরি প্রথম বিমানের খানিকটা সুতো। যাতে মঙ্গলে প্রথম উড়ানের সঙ্গে জুড়ে থাকে পৃথিবীর প্রথম উড়ানের স্মৃতি ও ইতিহাসও।

মঙ্গলগ্রহে মাটির টান চাঁদের থেকে বেশি, তবে পৃথিবীর থেকে অনেক কম। তাই পৃথিবী থেকে ১.৮ কিলোগ্রাম ওজনের যে কপ্টারটি পার্সিভিয়ারেন্স রোভারের পেটে করে পাঠানো হয়েছে, লালগ্রহের মাটিতে তার ভার ৬৭৫ গ্রাম। এত হাল্কা একটি কপ্টার ওড়াতেও এত কেন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিজ্ঞানীদের! এর উত্তর লুকিয়ে আছে লালগ্রহের বাতাসে। সেখানে বাতাসের চাপ পৃথিবীর বাতাসের চাপের এক শতাংশেরও কম। এত কম ঘন বাতাসে ওইটুকু হেলিকপ্টারকে ওড়াতে হলেও তার ডানাকে পৃথিবীর যে কোনো কপ্টারের তুলনায় অনেক বেশি জোরে ঘোরাতে হবে। ইনজেনুইটির ডানা অত জোরে ঘোরানোর সময়েই সমস্যা দেখা দেওয়ায়, থামিয়ে দিতে হয়েছে পরীক্ষা।

নাসার প্রাথমিক পরিকল্পনাটি এই রকম: ছোট্ট কপ্টারটি প্রথমে ঘুরন্ত ডানায় ভর করে ১৬ ফুট উঁচুতে উঠবে। তারপরে সামনের দিকে এগোবে এবং যেটি তাকে নিয়ে এসেছে, সেই পার্সিভিয়ারেন্স রোভারের ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাবে। প্রথম উড়ানটি হবে ৩০ সেকেন্ডের। সফল হলে মাসখানেকের মধ্যে অন্তত পাঁচ বার ওড়ানো হবে কপ্টারটি। প্রতিটি উড়ানে আগের বারের চেয়ে কঠিন কসরত করতে হবে ইনজেনুইটিকে। আপাতত এক দিনে সূর্যের আলোয় ব্যাটারি ফের পুরো চার্জড হয়ে গেলে ইনজেনুইটির একটি ক্যামেরা মঙ্গল-দিগন্তের একটি সাদা-কালো ছবি পাঠাবে পার্সিভিয়ারেন্স রোভার মারফত। পরে অন্য ক্যামেরায় তোলা রঙিন ছবিও পাঠাবে এটি। ১৪ তারিখের পর স্পষ্ট হবে, রাইট ভাইদের স্বপ্ন মঙ্গলেও ডানা মেলে কি না!

ইনজেনুইটির চারটি পা রয়েছে। যানটির মূল কাঠামো বাক্সের মতো দেখতে। এতে দুটি ক্যামেরা, কম্পিউটার ও দিকনির্দেশনার (নেভিগেশন) সেন্সর রয়েছে। মঙ্গলে রাতের পরিবেশ অনেক ঠান্ডা থাকে। ওই সময় তাপমাত্রা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়। তাই যন্ত্রটি সচল রাখতে রাতে অনেক বেশি জ্বালানি শক্তির প্রয়োজন হয়। সে জন্য ব্যাটারি রিচার্জ করতে মহাকাশযানটিতে সোলার সেল লাগানো রয়েছে।

Related posts

ইউটিউবের নতুন দুই ফিচার

News Desk

পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব: শুধু কি আকস্মিক ঘটনা, নাকি অন্য কিছু?

News Desk

সরকার ফেসবুক ও ইউটিউবকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে চায়

News Desk

Leave a Comment