সোহানের দোতং পাহাড় ও জলপাই গানের গল্প
বিনোদন

সোহানের দোতং পাহাড় ও জলপাই গানের গল্প

এই ইটের শহর পোড়ায় খালি
জোড়াতালি জীবন আমার ভাল্লাগেনা রে…
কে কার রাখে খবর দম ফুরালেও 
একলা একা নিথর দেহ কাইন্দা মরে রে…

ইটের শহরে নাগরিক যন্ত্রণার চোরাবালি জোড়াতালি দিতে দিতে কেউ কেউ হাঁপিয়ে ওঠে। পালিয়ে যাওয়ার জায়গা খোঁজে পাহাড় কিংবা সমুদ্রে। নাগরিক জীবনের নাভিশ্বাস থেকে ছুটি নিয়ে সবুজ পাহাড়ে মাথা গোঁজার প্রয়াসে লেখা গান ‘চল দোতং পাহাড়’। শুরুতে লেখা চারটি লাইন এই গান থেকে নেওয়া। গানটি লিখেছেন এই সময়ের তরুণ সংগীতশিল্পী সোহান আলী। 

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গানটি প্রকাশের পর থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছেন শিল্পী সোহান। এভাবে একে একে ছয়টি গান প্রকাশ করেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে তাঁর সর্বশেষ গান জলপাই। প্রকাশের পর থেকে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই গানটিও। 

জলপাই গানটি উত্তরবঙ্গে প্রচলিত বিয়েবাড়ির গীত। এই গানে উত্তরবঙ্গের ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ইলেক্ট্রনিক ড্যান্স মিউজিক বা ইডিএমের সমন্বয়ে র‍্যাপ অংশ জুড়ে দিয়েছেন সোহান। এই গানে উত্তরবঙ্গের মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিস্তা নদী রক্ষা এবং স্থানীয় যৌতুক প্রথা বন্ধের আহবান উঠে এসেছে। 

এই প্রসঙ্গে সোহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গানটি আমাদের অঞ্চলের বিয়ের গীত। গানটি প্রকাশের পর থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি, বেশ ভালো। বিশেষ করে দেশের বাইরে আসাম-ত্রিপুরা থেকে মানুষ যখন মেইলে কিংবা ফেসবুকে জানায়, খুব ভালো লাগে। জলপাইয়ের কাজটা করার পর জানতে পারি এই গানটিই রংপুর অঞ্চলের বিয়ের গীত নিয়ে মেইন স্ট্রিমের প্রথম কাজ।’ 

সোহানের বাড়ি দিনাজপুরে, বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গজুড়ে দৌড়ঝাঁপ দিয়ে। ছোটবেলায় মায়ের কাছ থেকে গানের হাতেখড়ি সোহান আলীর। যদিও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সারেগামা শেখা হয়নি। নজরুলসংগীত দিয়ে শুরু করে তবলায় হাত পাকিয়েছেন শুরুর পর্বে। প্রথমে গিটার, তারপর সংগীতায়োজনে মনোনিবেশ। নিজেই গান লিখেন, সুর করেন। সেই লেখায় সুর ও সংগীতায়োজনের দায়িত্বও নিজের কাঁধেই। দীর্ঘদিন ধরেই গানের চর্চা করে চলেছেন এই তরুণ। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের পাশাপাশি নিজের মৌলিক গান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

গান নিয়ে শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া কেমন জানতে চাইলে সোহান জানান, ‘আমি চেষ্টা করি সব সময় একটা গান থেকে যেন আরেকটা গান সম্পূর্ণ আলাদা হয়। এটা আসলে নিজের সঙ্গে নিজের যুদ্ধ। আমি সব সময় চেয়েছি নিজের গান নিয়ে কাজ করতে। আমাকে যদি দুজনও চেনে সেটা যেন নিজের গান দিয়ে চেনে।’

চল দোতং পাহাড় গানের গল্প জানতে চাইলে সোহান জানান, ‘আমি পঞ্চগড়ে বড় হয়েছি। অর্ধেক বছর পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। পাহাড় ছোটবেলা থেকেই আমার সঙ্গে ছিল। আমি ঘোরাঘুরি খুব পছন্দ করি, ট্রাভেল করতে ভালো লাগে। লকডাউনের সময় খুব বাজে সময় কাটিয়েছি ঢাকা শহরে। তখন আচমকা মাথায় আসে ‘এই ইটের শহর পোড়ায় খালি, জোড়াতালি জীবন আমার ভালো লাগে নারে।’ তারপর এইটার সঙ্গে আগের লেখা পাহাড়ের কথায় কয়েকটা লাইন জুড়ে দেই। আমি চেয়েছি আমাদের পাহাড়ের মানুষের কিছু বিষয় এই গানে তুলে ধরতে। সেই চিন্তা থেকে দোতং পাহাড়, বিন্নি চাল, জুমচাষ এবং মারফা শব্দগুলো গানে উঠে এসেছে।

Source link

Related posts

পাইরেসির কবলে শাকিবের ‘বরবাদ’, আইনের দ্বারস্থ প্রযোজক

News Desk

২০০ কোটি রুপির ‘হীরামান্ডি’তে কত কোটির গয়না পরলেন অভিনেত্রীরা

News Desk

২৫ বছর পর পরিচালনায় জনি ডেপ, অভিনয় করছেন আল পাচিনো

News Desk

Leave a Comment