চলে গেলেন ‘ব্রেথলেস’ নির্মাতা জ্যঁ-লুক গদার
বিনোদন

চলে গেলেন ‘ব্রেথলেস’ নির্মাতা জ্যঁ-লুক গদার

চলে গেলেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা নির্মাতা জ্যঁ-লুক গদার। গতকাল মঙ্গলবার ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ফ্রান্সের এই নির্মাতা। ‘ব্রেথলেস’-এর মতো কালজয়ী সিনেমা বানিয়ে সারা বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। ফরাসি নিউ ওয়েভ আন্দোলনের পুরোধা গদারের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশের খ্যাতিমান নির্মাতারা। ২০০২ সালে সাইট অ্যান্ড সাউন্ড ম্যাগাজিনের এক জরিপে সমালোচকদের প্রদত্ত ভোটে সর্বকালের সেরা দশ পরিচালকের তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল গদারের নাম। ২০১০ সালে একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয় তাঁকে। ২০১৮ সালে তাঁর সিনেমা ‘ইমেজ বুক’ পায় স্পেশাল পাম দ’র। ২০১৪ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি পুরস্কার পায় তাঁর ‘গুডবাই’।

আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র আন্দোলনের শেষ নক্ষত্র বলা যায় গদারকে। তাঁকে বলা হয় ফরাসি নিউ ওয়েভ আন্দোলনের গডফাদার। ক্যামেরাকে কলমের মতো ব্যবহার করেছেন তিনি। আবিষ্কার করেছেন নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব। ষাটের দশক থেকে সিনেমা নিয়ে তাঁর নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা বহু পরিচালককে পথ দেখিয়েছে। চিরাচরিত পারিপাট্য, চিত্রায়ণের ব্যাকরণকে ধাক্কা দিয়েছিল গদারের হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরার কাজ। তাঁর হাতেই জন্ম নিয়েছিল জাম্প কাট।

গদারের নির্মিত সিনেমা অনুপ্রাণিত করেছে প্রখ্যাত নির্মাতা মৃণাল সেন ও সত্যজিৎ রায়কেও। গদারের ফিল্ম টেকনিক আর ক্যামেরার ব্যবহার মুগ্ধ করেছে তাঁদের। বাংলাদেশের নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অমিতাভ রেজা চৌধুরীসহ অনেকের কাজেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে তাঁর সিনেমা। গদারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তাঁরাও।

ফরাসি নির্মাতা জ্যঁ-লুক গদার। ছবি: সংগৃহীত ১৯৬০ সাল থেকে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় গদারের আত্মপ্রকাশ। সে সময় থেকেই ফরাসি সিনেমা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। তাঁর সিনেমা বিশ্ব সিনেমাকে উপহার দিয়েছে এক নতুন আঙ্গিক। কোয়ান্টিন টারান্টিনো, বার্নার্ডো বার্তোলুচি, স্টিভেন স্পিলবার্গের মতো বিশ্ববরেণ্য নির্মাতাদের কাছে গোদার ছিলেন আইকন।

গদারের জন্ম ১৯৩০ সালের ৩ ডিসেম্বর, ফ্রান্সের প্যারিসে। চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে চলে যান। যুদ্ধ পরবর্তী ফ্রান্সে ফিরে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। কলেজ জীবনে থাকাকালীন সিনেমার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় গদারের। ১৯৫০ সালে যুক্ত হন ফ্রান্সের বিখ্যাত ‘কাইয়ার দু সিনেমা’ ক্লাবে। যার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন পরিচালক ত্রুফো। প্রথমদিকে একের পর এক রাজনৈতিক তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন গদার। তাঁর তৈরি তথ্যচিত্রগুলিই পরবর্তী সময়ে ‘সিনেমা ভেরিতে মুভমেন্ট’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বিখ্যাত জার্মান নাট্যকার বের্টল্ট ব্রেখট ছিলেন গদারের অনুপ্রেরণা। মানুষের মনে সেই একমাথা কাঁচা-পাকা চুল আর মোটা ফ্রেমের চশমাতেই অমর হয়ে রইলেন গদার।

Source link

Related posts

সিনেমাটি দেখার দায়িত্ব রয়েছে এই প্রজন্মে

News Desk

মার্ভেলের সিনেমায় প্রথমবার বলিউড তারকা

News Desk

মিঠুন চক্রবর্তীর জন্মদিন

News Desk

Leave a Comment