পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
বাংলাদেশ

পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

পাট কেটে জাগ (পচানো) দেওয়া শুরু হয় জুলাই মাস থেকে। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিলে পানি নেই। অনেকে ডোবা-নালায় সেচ দিয়ে পাট জাগ দিয়েছেন। এভাবে পাট ভালোভাবে পচেনি। এতে পাটের ভালো দাম না পাওয়ার শঙ্কায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষকরা।

উপজেলার মঙ্গলপুর এলাকার অধিকাংশ কৃষক পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তাদের একজন গোপেশ রায়। তিনি প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। যদিও বিগত বছরে আবাদ করতেন তার চেয়েও বেশি। পাট জাগ দেওয়ার জায়গার অভাবসহ নানান কারণে এখন আবাদ কমিয়ে দিয়েছেন।

শুধু গোপেশ রায় নন, জেলার বিভিন্ন এলাকার পাট চাষিরা এবার পানির অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। যারা আগেভাগে পাট কেটেছেন, তারা জাগ দিতে পারেননি। অনেকেই কষ্ট করে খালে পানি ভরাট করে জাগ দিলেও পাট পচেনি। ফলে সঠিকভাবে উৎপাদন হয়নি। আবার পাট বেশিদিন রেখে দিলেও সেই জমিতে আমন চারা রোপণ করতে পারবেন না। এমন উভয় সংকটের মধ্যেই পড়েছেন কৃষকরা।

ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জাগ দেওয়ার সমস্যায় এই এলাকায় পাটের আবাদ কমে গেছে। এবারে যারা পাট আবাদ করেছে তাদের আক্কেল হয়ে গেছে। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারেনি। কষ্ট করে যারা জাগ দিয়েছে তারাও ভালোভাবে আঁশ ছাড়াতে পারেনি। অনেকেই পাট কাটার পর জাগ দেওয়ার পানির অভাবে শুকিয়ে ফেলেছে।’

বীরগঞ্জ উপজেলার নাগরগঞ্জ এলাকার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই মাসে যারা পাট কেটেছেন, তাদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। জাগ দিতে না পেরে অনেকেই নষ্ট করে ফেলেছেন। আবার যারা জাগ দিয়েছেন তাদের সেচ দিতে পানি ভরাট করতে হয়েছে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে।’

একই এলাকার শুসেন রায় বলেন, ‘আগেভাগেই পাট কেটে ফেলতে হয়। কারণ পাট কাটার পর ওই জমি তৈরি করে আমন ধান রোপণ করতে হয়। ফলে চাইলেও আমরা জমিতে বেশিদিন পাট রেখে দিতে পারি না। এবারে তো মহাবিপদ হয়ে গিয়েছিল। জাগ দিতে না পারায় আঁশ কম হয়েছে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে।’

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে চার হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। এ পর্যন্ত পাট কাটা হয়েছে দুই হাজার ৯২২ হেক্টর জমিতে। আর এখন পর্যন্ত উৎপাদন পাওয়া গেছে হেক্টর প্রতি ১১.৫১ বেল (প্রতি বেল ৫ মণ)।

দফতরটির উপ-পরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, ‘ইতোমধ্যে অনেক কৃষক পাট কেটে জাগ দিয়েছেন। কয়েকজন জাগ দেওয়া সম্পন্ন করেছেন। এখন যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে, তাই জাগ দিতে তেমন সমস্যা হবে না। আর এতে করে কৃষকদের পাট উৎপাদনে তেমন সমস্যাও হবে না। তাছাড়া এই পাটের জমিতেই অনেকেই সুগন্ধী জাতের ধানের আবাদ করবে। তাই একটু দেরি করে পাট কাটা ও জাগ দেওয়া হলেও তেমন সমস্যা হবে না। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।’

Source link

Related posts

‘বাড়ি দখল’ নিয়ে ববি ও বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

News Desk

উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসছে শীত, হাসপাতালে বাড়ছে ভিড়

News Desk

সূচনার সূচনাতে থাকছে যানজট নিরসন

News Desk

Leave a Comment