Image default
বাংলাদেশ

হাটে ছাগল আছে ক্রেতা নেই

ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পশুর হাটে কোরবানির গরু-ছাগল বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে এখনও আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না বিক্রেতা ও হাটের ইজারাদার। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় ছাগলের হাট নওহাটা। এ হাটে ক্রেতা কম।

বুধবার (৫ জুলাই) হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে ঘোরাঘুরি করছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। চলছে দরদাম। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ব্যবসায়ী ও খামারিরা ট্রাক ও অটোরিকশায় করে ছাগল আনছেন হাটে। কিন্তু হাটভর্তি ছাগল থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না।

কৃষক ও খামারিরা জানান, বন্যার কারণে বাইরের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা আসেননি। তাই হাটে ক্রেতার সংকট। লোকসান দিয়ে ছাগল বিক্রি করছেন কেউ কেউ। তবে অনেকে সারাদিন অপেক্ষার পরও ক্রেতা না পেয়ে ছাগল নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ৮২ হাজার। কিন্তু জেলায় কৃষক ও খামারি প্রায় তিন লাখ ৮২ হাজার ৫০০টি গরু-ছাগল প্রস্তুত করেছেন; যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আখতার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার নওহাটা পশুর হাট পরিদর্শন করেছি। সোমবার সিটি হাট পরিদর্শন করেছিলাম। জেলায় কোরবানি উপলক্ষে চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পশু পালন হয়েছে। বন্যার কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় বাজারে পশুর দাম কমে গেছে। এছাড়া গরু-ছাগল রাখার জায়গার অভাবে ক্রেতারা কিনছেন না। আশা করা যাচ্ছে, বুধবার-বৃহস্পতিবার গরু-ছাগল বেচাকেনা বাড়বে।

নওহাটা হাটে খাসি নিয়ে আসা ব্যবসায়ী রেফা হোসেন বলেন, পাঁচটি খাসি এনেছি। একটিও বিক্রি করতে পারিনি। এখনও হাট জমে উঠেনি। ক্রেতা নেই। আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যে ক্রেতা আসতে শুরু করবে।

মঙ্গলবার বিকালে হাটে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ, টিন ও খুঁটি দিয়ে হাট সাজানো হয়েছে। রঙিন কাপড় দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে হাসিল আদায়ে স্বেচ্ছাসেবীদের স্থান। হাটে ছোট-বড়, মাঝারি-সব আকারের প্রচুর খাসি আছে। তবে সবচেয়ে বেশি আছে মাঝারি আকারের খাসি। এসব খাসির দাম ২০ হাজার টাকার বেশি চাইছেন বিক্রেতারা। ছোট খাসি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা এবং বড়গুলো ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। কিন্তু মাঝারি সাইজের খাসি ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকায় এবং ৩০ কেজি ওজনের খাসি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকা থেকে দুটি মাঝারি আকারের খাসি এনেছিলেন জামাল হোসেন। তিনি জানান, প্রতিটি খাসির দাম তিনি চেয়েছিলেন ২০ হাজার টাকা করে। ১৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করতে পেরেছেন।

জামাল হোসেন বলেন, এবার খাসির খাবারের দাম ছিল বেশি। কমপক্ষে ১৮ হাজার টাকা করে প্রতিটি খাসি বিক্রি করতে পারলে কিছুটা লাভ হতো। ক্রেতা না থাকায় কম দামে বিক্রি করে দিয়েছি।

হাট সংশ্লিষ্টরা জানান, নওহাটায় প্রতি বছর সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন হাট বসে। শুধু কোরবানি ঈদের আগে সপ্তাহখানেক হাট বসে প্রতিদিন। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে খাসি বেচাকেনা করতে আসেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ ও উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবও পড়েছে পশুর হাটে। ফলে খাসি বিক্রি কম।

নওহাটা পশুর হাটের ইজারাদারদের একজন আবুল বাসার সুজন। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদ ঘিরে এ বছর খাসির আমদানি প্রচুর। কিন্তু হাটে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। খাসির চাহিদা ও দাম দুটোই কম। তার ওপর বেশিরভাগ মধ্যবিত্তরা হাটে না এসে এলাকা থেকে পশু কিনেছেন। যে টাকায় আমরা হাট ইজারা নিয়েছি, এখন লোকসানে পড়ার দুশ্চিন্তায় আছি।

Source link

Related posts

যুবলীগ নেতার উপর হামলা

News Desk

মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিএইচবিএফসি থেকে ঋণ নেয়ার সাজা বাড়ছে

News Desk

নিজের পাতা ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু

News Desk

Leave a Comment