সিলেটে খাবার সংকট
বাংলাদেশ

সিলেটে খাবার সংকট

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানি বাড়ছে। সেই সঙ্গে চলছে টানা বর্ষণ। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। দুর্গত এলাকার অনেকের কাছে এখনও ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছানোর অভিযোগ উঠেছে।

নগরীর সাদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এমন বন্যা আর কখনও দেখেনি। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর অধিকাংশ এলাকা। বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অনেক না খেয়ে দিন পার করছেন।’ 

তালতলার এলাকার গৃহিণী সানজিদা ইসলাম জানান, ‘সিলেটের অবস্থা ভয়াবহ। বিশুদ্ধ পানিসহ খাবারের সংকটে আছি। বাসার সব মালামাল পানিতে ডুবে আছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে খাটের ওপর বসে দিন কাটাচ্ছি।’

আরও পড়ুন: বন্যায় দিশেহারা মানুষ, খুঁজছে আশ্রয়স্থল

এদিকে শনিবার (১৮ জুন) সিলেটের বন্যাদুর্গত উপজেলায় সহায়তা দিতে অনেকে নৌকা নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নগরীর তেররতন এলাকার বাসিন্দা হুমায়ৃন কবীর সুহিন বলেন, ‘মানুষের কষ্টের এই সময়ে আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। জেনারেটরের সাহায্যে আমার বাসা থেকে খাবার পানি সরবরাহের পাশাপাশি শুকনা খাবারও বিতরণ করছি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বন্যার পানি বেড়ে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় সরকারি কোনও সহায়তা পৌঁছায়নি।’

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দিন দিন সিলেটের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। অনেকে আশ্রয়ের খোঁজে এদিক-ওদিক ছুটছেন। গবাদি পশু ও ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।

আরও পড়ুন: ঘরের ভেতর হাঁটুপানি, অসহায় সিলেটের মানুষ

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নৌবাহিনীর ৩৫ জনের একটি ডুবুরিদল কাজ শুরু করেছে। বিকালে ৬০ জনের আরেকটি দল আসবে। দুপুরের পর আসবে কোস্ট গার্ডের দুটি ক্রুজ। তাদের মধ্যে একটি সুনামগঞ্জ এবং একটি সিলেটে উদ্ধারকাজে যাবে। এছাড়া বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকবে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা গ্রামে গ্রামে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে।

বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী (ছবি: ফোকাস বাংলা)

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে সেনাবাহিনী। বিনামূল্যে এসব নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। শনিবার (১৮ জুন) আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২০ জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে ভারী বৃষ্টি হবে ১৯ জুন পর্যন্ত। এর পরদিন কিছুটা কমে ২৭ জুন পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে সিলেটের প্রধান নদী সুরমার কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে।

Source link

Related posts

রাজশাহীতে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ কৃষক লীগ নেত্রীর

News Desk

‘১২২ বছরের মধ্যে এমন বন্যা হয়নি সিলেট-সুনামগঞ্জে’

News Desk

নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?

News Desk

Leave a Comment