মারিউপোলে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা, কলেরা-মহামারির শঙ্কা
আন্তর্জাতিক

মারিউপোলে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা, কলেরা-মহামারির শঙ্কা

রুশ সেনার দখলে চলে যাওয়া শহরটির স্বাস্থ্য কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে

ইউক্রেনের মারিউপোলে বড়সড় আকার ধারণ করতে পারে কলেরা সংক্রমণ। প্রায় পুরোপুরি রুশ সেনার দখলে চলে যাওয়া শহরটির স্বাস্থ্য কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এর মাঝেই সেখানে বাড়ছে কলেরা সংক্রমণ। যা আর একটু দ্রুত গতিতে ছড়াতে শুরু করলে পরিস্থিতি ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা দপ্তর। শুক্রবার দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়- গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মে মাস থেকেই কলেরায় সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে মারিউপোলে। এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল তলানিতে গিয়ে ঠেকায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে সময় নেবে না। রিপোর্টের আরও দাবি, খেরসন অঞ্চলেও দেখা দিয়েছে ওষুধ-সঙ্কট।

ব্রিটেনের পাশাপাশি মারিউপোল নিয়ে একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও। তারা বলছেন, যুদ্ধের জেরে মারিউপোলে বিশুদ্ধ পানির জোগান এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কাজকর্ম সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাহত। যার জেরে সেখানে কলেরা সংক্রমণের বিশেষ বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে গত মাস থেকে। মারিউপোলের মেয়রের উপদেষ্টা পেট্রো আন্দ্রুয়শচেঙ্কোর কথায়, “কলেরা সংক্রমণ মহামারির আকার নেওয়ার আশঙ্কা বেশ অনেকটাই, একেবারে রেড লেভেল।” তবে পেট্রো জানান, যে ভাবে অঞ্চলটিকে দখল করে রেখেছে রুশ সেনা তাতে এখনও পর্যন্ত ঠিক কত জন কলেরায় আক্রান্ত, তার যথার্থ পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

উল্লেখ্য, গত ১১ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার করা একটি পোস্টে মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো লিখেছিলেন, “শহরে এখন অনেক সমস্যা। স্বাস্থ্য পরিষেবায় বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এ দিকে শহরের বেশির ভাগ মানুষই এখন অসুস্থ। ওষুধপত্র এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিক না-হলে, পানীয় জল সরবরাহ শুরু না হলে ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক না হলে এই শহরে মহামারি ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগবে না।” বস্তত, গত মাসে মারিউপোল নিয়ে একই কথা জানান সেখানে কর্মরত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা ডরিট নিটজ়ানও।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১০৭ দিনের মাথায় ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটেনের প্রকাশিত এই প্রতিরক্ষা আপডেটে আরও জানানো হয়, তাদের দখলে আসা প্রায় সব অঞ্চলেই ন্যূনতম জনপরিষেবাগুলি পৌঁছে দিতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে রাশিয়া। পানের যোগ্য জলের সরবরাহ তো বার বার ব্যাহত হচ্ছেই, টেলিফোন পরিষেবারও বেহাল দশা। যদিও এলাকাগুলিতে এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবার কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি বলেই জানানো হয়েছে ব্রিটেনের পক্ষ থেকে।

এদিকে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদোনেটস্ক-এর দখলকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে পৌঁছেছে উত্তেজনা। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বৃহস্পতিবার জানান, ইউক্রেনীয় সেনা ওই শহর নিজেদের দখলে রাখতে জোর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, শহরের প্রতিটি রাস্তা এখন যুদ্ধক্ষেত্র। সেখানকার একাধিক নিদর্শন ইতিমধ্যেই ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ সেনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সেভেরোদোনেটস্ক শহরের উপরেই টিকে রয়েছে ডনবাস অঞ্চলের ভাগ্য।

পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলি যতই নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকি দিক বা মস্কো থেকে তেল কেনায় মুখ ফিরিয়ে নিক না কেন, আগামী অন্তত বেশ কয়েক বছর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানির জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরতা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারবে না তারা- বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এসে এই মন্তব্য করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বর্তমানে রাশিয়া থেকে ৪০% গ্যাস আমদানি করে ইইউ। তেলের ক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত রুশ-নির্ভরতা প্রায় ৯০% কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তারা। তবে গ্যাসের ক্ষেত্রে তেমন কিছু জানানো হয়নি। এদিকে, সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান গতিতে বেড়েছে গ্যাস ও তেলের দর। যা থেকে রুশ সংস্থাগুলির আখেরে লাভই হচ্ছে বলে মন্তব্য পুতিনের।

ডি-ইভূ

Source link

Related posts

যুক্তরাষ্ট্রে বিমান বিধ্বস্ত, সব যাত্রী নিহত

News Desk

ফিলিস্তিনে দ্বি-রাষ্ট্র সংকটের পক্ষে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

News Desk

কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে গুগলও

News Desk

Leave a Comment