শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
বাংলাদেশ

শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। তবে শুক্রবার (১০ জুন) সকাল থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি উজানে কমলেও ভাটিতে বাড়ছে। উপজেলার মালিঝিকান্দা ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি না হওয়ায় উপজেলা পরিষদ চত্বর ও সদর বাজার থেকে পানি নদীতে নেমে গেছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যাও কমেছে। তবে উজানে পানি কমার পর শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের হাঁসলিগাঁও, জুলগাঁও, রাঙ্গামাটিয়া ও দেবোত্তরপাড়া এবং হাতিবান্ধা ইউনিয়নের হাতিবান্ধা, ঘাগড়া, বেলতৈল, মারুয়াপাড়া, কামারপাড়া ও সরকারপাড়া গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে। এসব এলাকার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে এবং উপজেলার গ্রামীণ ও পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঢলের পানির প্রবল তোড়ে ১৮০ ফুট এলজিইডির পাকা সড়ক, দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, মহারশি নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানের দেড় কিলোমিটার এবং সোমেশ্বরী নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানের এক কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্ধশত কাঁচা ও আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২১২ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ২০ হেক্টর জমির আউশ আবাদ সম্পূর্ণ ও ৩ হেক্টর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭৪০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে।তার মধ্যে ৩৮ হেক্টর জমির সবজির ক্ষতি হয়েছে। ৩০ হেক্টর জমির সবজির সম্পূর্ণ ও ৮ হেক্টর জমির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। 

ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‌‘প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের ফলে মহারশি নদীর পানি বেড়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ঝিনাইগাতী বাজার ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। তাই পাহাড়ি ঢলের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ভাটি এলাকায় পানি ঢুকছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া ১০ মেট্রিক টন খয়রাতি (জিআর) চাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। মহারশি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।’

উল্লেখ্য, ভারী বর্ষণ এবং মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর বাজার ও উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে ঝিনাইগাতী সদর, কাংশা ও ধানশাইল ইউনিয়নের হাজারও পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আর নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালি নদীর পানি প্রবেশ করে যোগানিয়া ইউনিয়নের আরও আটটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ভেসে যায় শতাধিক পুকুরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় গ্রামীণ সড়ক ও ফসল।

Source link

Related posts

স্বাধীনতার পরে এই প্রথম নীলফামারীতে শিশুপার্ক, মাতৃভাষা দিবসে যাত্রা শুরু

News Desk

পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্লাজায় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪

News Desk

নতুন করে কি ঘটতে পারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?

News Desk

Leave a Comment