দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের অফিস ঘেরাও
বাংলাদেশ

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের অফিস ঘেরাও

আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনসহ ১৬ দফা দাবিতে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সদস্যরা। বুধবার (১৮ মে) দুপুরে দিনাজপুর শহরের সরকারি কলেজ মোড় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সংগঠনটির সদস্যরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন । সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন– জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা শাখার সহ-সভাপতি শিবানী উরাও, বাসদের দিনাজপুর সমন্বয়ক কিবরিয়া হোসেন প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে সাঁওতাল, মুন্ডা, রাজোয়ার, তুরি, কর্মকার, মালো, মাহাতো, মালপাহাড়িয়া, গন্ড, পাটনি, বাগদি, মাহালী, ডহরা, ভূমিজ, আঙ্গুয়ার রাজোয়াড, বেতিয়া, নুনিয়াহাড়ি, পাহাড়িয়া, ভূঁইয়া, বাগদী, রবিদাস, রাই, বেদিয়াসহ ৩৮টি গোষ্ঠী রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদেরও বিশাল অবদান রয়েছে। এই দেশ স্বাধীন করতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অনেকে জীবন দিয়েছেন। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর নিজ দেশে এসে আদিবাসীরা দেখেন নিজের বাড়িঘর, চাষের জমি, ভিটা-মাটি দখল হয়ে গেছে। যা তারা আজ পর্যন্ত ফেরত পাননি।

 স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বর্তমান সময়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। তাদের ভূমি সমস্যা দিন দিন আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। একশ্রেণির ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের ওপর অত্যাচার, ভূমি থেকে উচ্ছেদ, জাল দলিল, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, মিথ্যা মামলা, লুটপাট, জবরদখল, দেশত্যাগে বাধ্যসহ নানা ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনি ইশতিহারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভূমি অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণের ঘোষণা করেছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনি ইশতিহারে ধর্মীয় নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের ওপর বৈষম্যমূলক আচরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনরোধ এবং তাদের ভূমি, বসতভিটা, বনভূমি, জলাভূমিসহ অন্যান্য সম্পত্তির পূর্ণ সংরক্ষণ নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

স্মারকলিপিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া, সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন, দখলি শর্তে খাস জমি প্রদানসহ ১৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

Source link

Related posts

অবশেষে বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

News Desk

সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

News Desk

সরকারি হাসপাতালে কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারের মেশিন, একই রোগের দুই রিপোর্ট

News Desk

Leave a Comment