কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার, গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
বাংলাদেশ

কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার, গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

শেরপুরের নকলায় কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) সকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে, তাকে গ্রেফতারসহ চার দাবিতে বিকালে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নকলা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠনের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিনকে কার্যালয়ে ঢুকে মারধর করেন রাহাত ও তার সহযোগী ফজলুল হক। এ ঘটনায় রাতে কৃষি কর্মকর্তা বাদী হয়ে নকলা থানায় মামলা করেন। মামলায় উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলুল হককে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে নকলা উপজেলা কমপ্লেক্সের কৃষি অফিসে ঢোকেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত ও ছাত্রনেতা ফজলুল হকসহ কয়েকজন। তারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিনের কাছে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির তালিকা নিয়ে জানতে চান এবং কোন ‘নেতাকে’ কত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কেও প্রশ্ন করেন। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা তাদের জানান, এই কর্মসূচিতে নির্ধারিত কৃষকদের নামেই বরাদ্দ দেওয়া হয়, রাজনৈতিক নেতাদের নামে নয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা গালাগাল শুরু করেন ও হুমকি দেন, একপর্যায়ে কর্মকর্তাকে মারধর করেন। চিৎকার শুনে কার্যালয়ের কর্মচারীরা এসে শাহরিয়ার মোরসালিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল সরকার বলেন, ‘ছাত্রনেতা হয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, রাহাত ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ চার দাবিতে বিকালে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এতে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ কৃষি সস্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক সালমা লাইজু, ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপপরিচালক সালমা আক্তার, তেল জাতীয় প্রকল্পের কর্মকর্তা খায়রুল আমিন শোয়েব, পার্টনার প্রকল্পের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন কায়সার, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সাখাওয়াত হোসেন ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মানবনবন্ধনে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিজ দফতরে শাহরিয়ার মোরসালিনের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। এ ধরনের ঘটনা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার এবং হুমকির। তাই আমরা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

এ সময় চারটি দাবি তুলে ধরেন তারা। সেগুলো হলো- ১) এ হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ২) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। 
৩) প্রণোদনা কর্মসূচি চলাকালীন তাদের পু্লিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৪) সরকারি কর্মকর্তাদের নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রণয়ন করতে হবে। 

নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পর সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে। সেইসঙ্গে মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

Source link

Related posts

নির্মাণ কাজ লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত : কাদের

News Desk

সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

News Desk

বুড়িমারী বন্দর দিয়ে সাত মাসে ৭৭৪ কোটি টাকার ভুট্টা আমদানি

News Desk

Leave a Comment