ঋত্বিক ঘটকের ভাঙা বাড়িতে জন্মশতবর্ষ উদযাপন
বাংলাদেশ

ঋত্বিক ঘটকের ভাঙা বাড়িতে জন্মশতবর্ষ উদযাপন

রাজশাহীর ভাঙা বাড়িতেই বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রভাবশালী নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকালে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি ২০০৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এই চলচ্চিত্রকারের জন্মবার্ষিকী পালন করে আসছে। এবারের অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে প্রদীপ প্রজ্বালন, ঋত্বিক ঘটকের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা এবং তার কালজয়ী ছবি ‘মেঘে ঢাকা তারা’ নিয়ে নির্মিত জীবনীচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে এই চলচ্চিত্রকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আহসান কবির লিটন বলেন, ‘ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহীতে কাটানো দিনগুলো তার সৃজনীজীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। পদ্মা নদী, শহরের পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তার ভাবনা ও চলচ্চিত্রে বারবার প্রতিফলিত হয়েছে।’

মিয়াপাড়ার এ বাড়িতেই ঋত্বিক ঘটকের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে অধ্যয়ন করেন। এখান থেকেই সাহিত্য, নাটক ও চলচ্চিত্রের প্রতি তার গভীর আগ্রহের সূচনা হয়। দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে তার পরিবার ভারতে পাড়ি জমায়।

নিজের নির্মাণ করা চলচ্চিত্রে দেশভাগের বেদনা, মানবিক দৃঢ়তা ও সমাজ বাস্তবতাকে কাব্যিক গভীরতায় তুলে ধরেছেন ঋত্বিক ঘটক। তার বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মেঘে ঢাকা তারা, কমল গন্ধার, সুবর্ণরেখা ও তিতাস একটি নদীর নাম। শক্তিশালী গল্পবলন ও আবেগঘন উপস্থাপনার জন্য তার চলচ্চিত্র আজও দর্শক ও নির্মাতাদের অনুপ্রেরণার উৎস।

ঋত্বিক ঘটকের ভাঙা বাড়িতে জন্মশতবর্ষ উদযাপন

রাজশাহীর বাড়িটির ৩৪ শতাংশ জমি ১৯৮৯ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে ইজারা দেয়। এরপর জায়গাটির উত্তরে গড়ে তোলা হয়েছে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের আধুনিক ভবন। এ ভবনের দক্ষিণ অংশে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বাড়ির ঘরগুলো দাঁড়িয়ে ছিল। বাড়িটি অপসারণ করে সেখানে অন্য স্থাপনা করার চেষ্টা অনেক আগে থেকেই করছিল হোমিও কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তবে সংস্কৃতি কর্মীদের বাধার মুখে বারবার তা বন্ধ হয়েছে। দাবির মুখে বাড়িটি সংরক্ষণেরও উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এর মধ্যেই গত বছর অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে ৬ ও ৭ আগস্ট গোপনে বাড়িটি ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। এখন সেখানে ভাঙা বাড়ির ইটগুলো স্তূপাকারে রয়েছে। ঋত্বিকের আর তেমন কোনও স্মৃতিচিহ্ন নেই।

Source link

Related posts

পদ্মা সেতু দিয়ে সময়মতো চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে পাটপণ্য

News Desk

ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

News Desk

‘ফোনালাপ ফাঁস’ নিয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment