চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিএনপি কর্মী মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২) নিহতের ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাউজান উপজেলার প্রধান দুইটি সড়ক চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ক এবং চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা সড়কের ওপর গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে এবং সড়কের উপর বসে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে, মুহাম্মদ আবদুল হাকিমকে হত্যার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে দেখা যায় কয়েকজন মুখোশ পরা যুবক মদুনাঘাট এলাকায় আবদুল হাকিমের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে পুনরায় মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। বেশ কয়েকটি গুলি প্রাইভেট কারের গ্লাস ছিদ্র হয়ে তার শরীরে লাগে। এ সময় তার সঙ্গে প্রাইভেটকারের ভেতর থাকা আরও একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল হাকিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিএনপি কর্মী আবদুল হাকিমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন নেতাকর্মীরা। তার হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাট, নোয়াপাড়া পথেরহাট, বাগোয়ান ইউনিয়নের গশ্চি নয়াহাট এবং পাহাড়তলী চৌমুহনী বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। একই সময়ে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একই দাবিতে রাউজান উপজেলা সদরেও বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় নেতাকমীরা মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। রাঙামাটি সড়কের মুন্সিরঘাটা, মদেরমহাল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে রাখেন। দুই ঘণ্টা অবরোধের কারণে প্রধান দুই সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের মদুনাঘাট বাজারের ওয়াসার পানি শোধনাগার প্রকল্পের মূল ফটকের সামনে মুখোশধারী কয়েকজন যুবক তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকার আটকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় তিনি রাউজান বাগোয়ান ইউনিয়নের নিজ গ্রামের বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম শহরের বাসায় যাচ্ছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে নগরের বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুহাম্মদ হাকিম আলী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্রীয় বিএনপির (বহিষ্কৃত) ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।
নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, আমার ভাইকে কে বা কারা গুলি করেছে। তিনি মারা গেছেন। আমি হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, খুনের ঘটনাটি ঘটেছে রাউজান উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায়। আমরা যৌথভাবে হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।