Image default
বাংলাদেশ

রাজবাড়ীর স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে রোববার (২৩ মে) রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে প্রিন্স খান (৩০) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই স্কুল ছাত্রী। অভিযুক্ত প্রিন্স খান বসন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মোতালেব খানের ছেলে।

বুধবার (২৬ মে) দুপুরে সরেজমিনে ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে গেলে সে জানায়, প্রিন্স খান ও তাদের বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে। করোনার আগে স্কুল খোলা থাকার সময় সে স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রিন্স তাকে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিতো। স্কুল বন্ধ হবার পরও প্রিন্স মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করতো। সে তার মাকে বিষয়টি জানালে তার মা প্রিন্সকে এই ধরণের কর্মকাণ্ড করতে নিষেধ করেন। এতে প্রিন্স ক্ষিপ্ত হয়। গত ১৪ই মে অর্থাৎ ঈদের দিন সকাল ১১টার দিকে সে তার খালাতো বোনকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে বের হয়। এসময় তারা বাজিতপুর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির সামনে রাস্তায় অবস্থানকালে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস তাদের সামনে এসে থামে। প্রিন্সসহ অপরিচিত আরও দুই যুবক ওই মাইক্রোবাস থেকে নেমে তার মুখ ও হাত পাঁ চেপে ধরে তাকে মাইক্রোবাসের মধ্যে উঠিয়ে নেয়। এরপর তারা তাকে (ওই ছাত্রীকে) মাইক্রোবাসে করে কামারখালি এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। পরে প্রিন্স তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

ওই ছাত্রীর মা বলেন, ‘প্রিন্স আমাদের দুসম্পর্কের আত্মীয় হয়। সে খুব বখাটে একটা ছেলে। আমি প্রিন্সকে আমার মেয়েকে উক্ত্যক্ত করতে নিষেধ করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়ের ক্ষতি করার পাঁয়তারা করতে থাকে। ঈদের দিন সকাল ১১টার একটু পর আমার মেয়ের খালাতো বোন আমার কাছে এসে জানায় যে প্রিন্স আমার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এ খবর শুনে আমি তাৎক্ষণিক প্রিন্সদের বাড়িতে যাই এবং তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন করি। অনেকবার প্রিন্সের সাথে ফোনে কথা বলার পর সে জানায়, আমার মেয়েকে যদি তার সাথে বিয়ে দেই; তাহলে সে আমার মেয়েকে ফেরত দিবে। একপর্যায়ে আমি আমার মেয়েকে তার সাথে বিয়ে দিবো বলে স্বীকার করে কৌশলে পরেরদিন (১৫ই মে) বিকেল ৫টার দিকে কামারখালি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রিন্সের কাছ থেকে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর আমরা থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। যে কারণে আমরা প্রিন্সসহ অজ্ঞাতনামা দুইজনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেছি।’

ছাত্রীর মা আরও বলেন, ‘মামলা দায়েরে পর থেকে এ পর্যন্ত প্রিন্স ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে তারা আমার মেয়েকে ও দুই ছেলেকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমরা খুবই আতংকে সময় পার করছি।’ এদিকে, এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রিন্সের বক্তব্য জানতে রাজাপুর গ্রামে তার বাড়িতে গেলে প্রিন্স লাঠি নিয়ে সাংবাদিকদের মারপিট করার জন্য তেড়ে আসেন। পরে তার প্রতিবেশীরা তাকে থামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সূত্র :রাজবাড়ী নিউস ২৪

Related posts

শতবর্ষী রেলস্টেশনটি ১৮ বছর ধরে বেহাল

News Desk

সুন্দরবনে সর্বোচ্চ সতর্কতা 

News Desk

ঈদের আনন্দ নেই রায়পুরের চার শতাধিক পরিবারে

News Desk

Leave a Comment