কুমার শানুর বিরুদ্ধে গর্ভাবস্থায় ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ সাবেক স্ত্রীর
বিনোদন

কুমার শানুর বিরুদ্ধে গর্ভাবস্থায় ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ সাবেক স্ত্রীর

‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ চলচ্চিত্রের গান ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সানাম’ শুনে কার মন না নেচে উঠেছে! এমন অনেক গানের সুরে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে চলেছেন গায়ক কুমার শানু। গানের জন্য যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তেমনি ব্যক্তিজীবন নিয়ে হয়েছেন সমালোচিত। বছরের পর বছর ধরে তাঁর দাম্পত্যজীবন, প্রেম, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক হয়েছে খবরের শিরোনাম। সম্প্রতি আবারও সেই আলোচনা ফিরে এল। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সাবেক স্ত্রী রিতা ভট্টাচার্য জানালেন কুমার শানুর সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে কতটা কষ্ট ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।

ফিল্ম উইন্ডোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিতা অভিযোগ করেন, কুমার শানুর ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একা ফেলে দেওয়া হয় এবং অপমানিত হতে হয়।

তিনি বলেন, ‘সে বড় গায়ক হতে পারে, কিন্তু মানুষ হিসেবে তার সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। সে কখনোই উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিল না। তাকে একজন গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা ছিল আমার স্বপ্ন। আমি তাকে ঠেলেছি, আমি কুমার শানুকে গায়ক কুমার শানু বানাতে সাহায্য করেছি।’

মুম্বাইয়ে শুরুর দিনগুলোর স্মৃতি তুলে ধরেন রিতা। স্মৃতিচারণা করেন একসঙ্গে কী ভয়াবহ দুর্দশার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। রিতা বলেন, ‘যখন আমরা মুম্বাইতে এসেছিলাম, আমাদের কাছে কোনো টাকা ছিল না, যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। একেবারেই শূন্য থেকে শুরু। সে তখন লুঙ্গি পরত। সে সব সময় মিথ্যে বলে যে তার পরিবার তাকে মুম্বাইয়ে পাঠিয়েছিল। যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে না চায়, তবে এড়িয়ে যাক, মিথ্যে বলার কী দরকার! সে সারা দিন মিথ্যে বলে। তাই আমি আমার তিন সন্তানকে বলেছি, এখন সময় এসেছে, তোমাদের কথা বলতে হবে। আমিই তাঁকে ঠেলে পাঠাতাম মুম্বাইয়ে সংগ্রাম করতে। আমরা মেঝেতে শুয়ে থাকতাম, এমনকি ফ্যানও ছিল না।’

রিতা অভিযোগ করেন, ‘“আশিকি” ছবির বিপুল সাফল্যের পর থেকেই কুমার শানুর আচরণ বদলাতে শুরু করে, সে হয়ে ওঠে “অসভ্য”।’

রিতার দাবি, কুমার শানু ধীরে ধীরে পরিবার থেকে দূরে সরে যান, এমনকি বড় ছেলে জিকোর বিয়ের সময়ও যোগাযোগ এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার শানু। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, ‘তার জীবনের কথা প্রকাশ্যে আলোচনা হওয়া সে পছন্দ করে, সেটা ভালো হোক বা খারাপ। কিন্তু সে তখন কোনো সাড়া দেয়নি, আমাকে আর জানকে ব্লক করে দিয়েছিল। সেটা ছিল ভীষণ অপমানজনক।’

নিজের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের কথা জানাতে গিয়ে রিতা অভিযোগ করেন, তৃতীয়বার যখন গর্ভবতী হন, সে সময় তিনি কুমার শানু ও তাঁর পরিবারের ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘জান গর্ভে থাকার সময় আমার বাবাকে হারাই। ওই সময় নির্যাতনের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। শানু আমাকে নিষ্ঠুরতার অভিযোগে আদালতে টেনে নেয়। যে মানুষ কিংবদন্তি হলো, সে-ই আমাকে নিষ্ঠুরতার অভিযোগে আদালতে নিল? সেটাও আবার আমি গর্ভবতী অবস্থায়। তখনই তার পরকীয়ার সম্পর্কও ছিল, যা আজ সামনে এসেছে।’

ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার শানু। ছবি: সংগৃহীতভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার শানু। ছবি: সংগৃহীত

রিতা আরও জানান, গর্ভাবস্থায় তাঁকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না। অমানবিক নির্যাতনের মধ্যে রাখা হতো। তিনি বলেন, ‘একদিন তারা বাইরে গিয়ে রান্নাঘরের স্টোরেজে তালা মেরে দিল। তখন আমি দারোয়ানকে দিয়ে এক কেজি চাল আনিয়ে রান্না করে খেয়েছিলাম। আমাকে নির্যাতন করা হতো, আমি গর্ভবতী, কিছুই করতে পারতাম না। এমনকি আমার সন্তানদের জন্য দুধ আনা বন্ধ করে দেয়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে পর্যন্ত বলে দেয়, তোমার টাকা আমরা দেব না। এদের মানুষ বলা ভুল হবে।’

১৯৮৬ সালে কুমার শানু ও রিতা ভট্টাচার্যের বিয়ে হয়। দম্পতির সংসারে জন্ম নেয় তিন সন্তান জিকো, জ্যাসি ও জান কুমার শানু। তবে ১৯৯৪ সালে অভিনেত্রী কুনিক্কা সদানন্দের সঙ্গে শানুর কথিত সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর তাঁদের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে। বিচ্ছেদের পর সন্তানদের দায়িত্ব পান রিতা।

গানের জগতে একের পর এক হিটের মাধ্যমে কুমার শানু যখন রাজত্ব চালিয়ে গেছেন, তখন সেই ঝলমলে আলো–আড়ালের দিনগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে রিতার সাম্প্রতিক অভিযোগগুলো। তিনি বলেন, কয়েক দশক পেরিয়ে গেছে, তবু তিনি এখনো সাবেক স্বামীর কাছ থেকে জানতে চান, কেন তাঁদের দাম্পত্য জীবনের এ পরিণতি হয়েছিল।

Source link

Related posts

মাত্র ৭ দিনে করোনামুক্ত সোনু

News Desk

দক্ষিণী সিনেমার শুটিংয়ে স্টান্টম্যানের মৃত্যু

News Desk

‘৮৪০: ডেমোক্রেসি প্রাইভেট লিমিটেড’

News Desk

Leave a Comment