রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০
বাংলাদেশ

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকাল ৪টায় উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের সত্তারঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

হামলায় গোলাম আকবর খোন্দকারসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পাশাপাশি গোলাম আকবর খোন্দকারের ব্যবহৃত গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরসহ ৩-৪টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এমনকি রাউজান থানার ওসির গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘটনাস্থলে রাউজান থানা পুলিশের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছে র‌্যাব, সেনাবাহিনীর টিম। বর্তমানে রাউজানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

উভয়পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- রাউজান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন চৌধুরী, গোলাম আকবর খোন্দকারের পিএস অর্জুন কুমার নাথ, এপিএস আসিকুর রহমান, যুবদল নেতা সাজ্জাদ হোসেন,  বিএনপি নেতা আওরঙ্গজেব সম্রাট, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি নাঈম উদ্দিন মিনহাজ, মোহাম্মদ হুমায়ুন, হেলাল, তাসফি, সুমন, গাজি সুলতান, রেওয়াজ উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, অনিক, মিরাজ, জনি, রিয়াদ, আজগর, শাহাদাৎ মিজা, রিবন, আমির, ইমন, সাজ্জাদ, সুমন, সাইমন, রিপন, গিয়াস উদ্দিন মুন্না, তারেক, সোহেল চৗধুরী, রবিউল ও আব্দুর শুক্কুরসহ অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন। আহতদের কেউ কেউ রাউজান গহিরা এলাকায় অবস্থিত একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহতরা নগরীর চমেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান কাজল বলেন, ‘আগামী ৯ আগস্ট রাউজানে জুলাইশহীদদের স্মরণে রাউজান কলেজ মাঠে বিএনপির কর্মসূচি রয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করা হয়। মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাটি গহিরা সত্তারঘাট এলাকায় গেলে শহর থেকে গোলাম আকবর খোন্দকারের নেতৃত্বে রাউজানের দিকে আসা নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। সংঘর্ষে আমাদের তিন জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ থেকে ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

বিএনপি নেতা গোলাম আকবর খোন্দকার অভিযোগ করেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাউজান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ইন্তেকাল করেন। আজ মঙ্গলবার তার কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে পৌরসভার বড়বাড়িতে যাচ্ছিলাম। গহিরা সত্তারঘাট ব্রিজ পাড় হলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা আমার গাড়িবহরে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জেলা পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলাউদ্দিন তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাউজানে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদেরকে ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

Source link

Related posts

তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ

News Desk

সেতু ভেঙে সেতু নির্মাণ, অপচয় সাত কোটি টাকা

News Desk

রঙিন চকে স্বপ্ন বুনছেন তারা

News Desk

Leave a Comment