তেল-পানিতে শিশুর ঝাড়ফুঁক, মানুষের ভিড়
বাংলাদেশ

তেল-পানিতে শিশুর ঝাড়ফুঁক, মানুষের ভিড়

চার বছরের এক শিশুর আল্লাহর নামে ঝাড়ফুঁক দেওয়া তেল ও পানি ব্যবহার করে নানা ধরনের জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মিলছে বলে দাবি করছেন অনেক রোগী। আর এটিকে তার পরিবার বলছে, আল্লাহ প্রদত্ত অলৌকিক ক্ষমতা।

ঝাড়ফুঁক দেওয়া এই শিশুর নাম লাবীব। স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। তার পরিচয় এখন ‘শিশু কবিরাজ’। 

প্রথমে তার পরিবারের সদস্যদের পরে তার আত্মীয়-স্বজনের ‘রোগমুক্তির’ খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় করছেন। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিশুটি।

ঘটনাটি শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ভাটি লঙ্গরপাড়া এলাকায়। তবে শিশুদের ঝাড়ফুঁক দেওয়ার ঘটনায় মানুষের ভিড় জমলেও সচেতন মহল বলছেন, এটা কুসংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস ছাড়া কিছুই নয়।

জানা গেছে, প্রতিদিন শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে এক এক করে পানি ও তেলের বোতল এগিয়ে শিশুটির মুখের কাছে ধরছেন। আবার কখনও শিশুটি তার বাবার কোলে বসে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের বোতল ভর্তি পানি, তেলের বোতলে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা ও বিকাল ৫টায় দুই ধাপে চলে এই ঝাড়ফুঁক। আগত রোগীর মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান বলেন, আমার দ্বিতীয় বারের মতো স্ট্রোক হওয়ার পর একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারতাম না। এই শিশু কবিরাজের চিকিৎসায় আমি এখন সুস্থ। আমি এখন লাঠি ছাড়া দ্রুত হাঁটতে পারি।

শিশুটির বাবা বলেন, আমার ছেলে শত শত মানুষের রোগ ভালো করেছে বলে রোগীরা আমাদের জানিয়েছেন। তার এই ক্ষমতা আল্লাহ প্রদত্ত। প্রথমে সে তার মাকে চিকিৎসা করে ভালো করেছে। পরে সুস্থ করেন এলাকার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানীয় কয়েকজন ফুটবল খেলোয়াড়কে। এরপর থেকে জানাজানি শুরু হলে মানুষের ভিড় জমে।

তেল-পানিতে শিশুর ঝাড়ফুঁক, মানুষের ভিড়

তিনি বলেন, আল্লাহর নাম নিয়ে আমার ছেলে ফুঁ দিয়ে দিলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যায় বিধায় হাজারো মানুষ আসে। এর জন্য আমার ছেলে আজ পর্যন্ত একটি টাকা কারও কাছ থেকে নেয়নি।

শেরপুর সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন বলেন, এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতিতে রোগ মুক্তির কোনও ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তেল-পানিতে শিশুর ঝাড়ফুঁক, মানুষের ভিড়

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, এই ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কার, যার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ঠিকানাসহ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Source link

Related posts

১০‌ এক‌র পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে ইটভাটা

News Desk

চীনের সঙ্গে টিকা নিয়ে সম্পর্কের কোনো ঘাটতি হয়নি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

News Desk

নতুন রূপে সেজেছে কুয়াকাটা, লক্ষাধিক পর্যটকের অপেক্ষায়

News Desk

Leave a Comment