ভাঙারি মালামালের ব্যবসা নিয়ে যুবদল নেতা-জামায়াত কর্মীর রেষারেষি, জনদুর্ভোগ
বাংলাদেশ

ভাঙারি মালামালের ব্যবসা নিয়ে যুবদল নেতা-জামায়াত কর্মীর রেষারেষি, জনদুর্ভোগ

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে জাহাজভাঙা কারখানার মালামালের (স্ক্র্যাপ) ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর সঙ্গে রেষারেষিতে জড়িয়েছেন সিরাজুল ইসলাম নামে এক যুবদল নেতা। তাদের রেষারেষিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জাহাজভাঙা কারখানার মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। 

স্ক্র্যাপ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মক্কা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জামায়াত কর্মী মো. নুর নবীর সঙ্গে জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামের বিরোধের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত এসব স্ক্র্যাপ সড়ক থেকে সরানো হয়নি।

নুর নবী জানিয়েছেন, ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বিএসআরএম স্টিলের কারখানার স্ক্র্যাপ ব্যবসার ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন নুর নবী। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত বিএসআরএম স্টিলের কারখানা থেকে স্ক্র্যাপবোঝাই ড্রাম ট্রাকগুলো বের হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী অংশে ঠাকুরদিঘী এলাকায় ট্রাকগুলো পৌঁছালে থানা যুবদলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে চালকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ক্র্যাপগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। এতে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে ৩০ লাখ টাকার মতো লোকসান হয়েছে নুর নবীর।

মো. নুর নবী বলেন, ‘১২টি ড্রাম ট্রাকে করে স্ক্র্যাপগুলো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু যুবদল নেতা সিরাজের নির্দেশে ৭০-৮০ জন সন্ত্রাসী গাড়িচালকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সব মালামাল সোনাপাহাড় থেকে ঠাকুরদিঘী এলাকায় সড়কে ফেলে দেয়। স্ক্র্যাপগুলোর মধ্যে লোহা, পিতল ও তামাসহ বিভিন্ন ধাতব বস্তু রয়েছে। যেগুলো বাছাই করে আলাদা করা হয়। এর আগে গত ১৫ ও ২০ জানুয়ারি সিরাজের শ্যালক জামালের নেতৃত্বে আমার সাত ট্রাক স্ক্র্যাপ লুট করে নিয়ে যান তারা। বিএসআরএমের কারখানায় তারা ছাড়া আর কেউ স্ক্র্যাপের ব্যবসা করতে পারবেন না বলেও আমাকে হুমকি দেন তারা। এসব ঘটনায় ১১ ফেব্রুয়ারি আমার মালামাল নেওয়ার জন্য নিরাপত্তা চেয়ে জোরারগঞ্জ, মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড থানায় লিখিতভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু থানা পুলিশ কোনও ধরনের সহযোগিতা করেনি। ফলে বুধবারের ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাক থেকে স্ক্র্যাপগুলো ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আমি জড়িত নই। বুধবার সন্ধ্যায় জোরারগঞ্জ থানার ওসিকে বিদায় জানাতে আমি থানায় ছিলাম। কারা স্ক্র্যাপগুলো সড়কের ওপর ফেলে দিয়েছে, তা আমার জানা নেই।’

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, ‌‘কারখানা থেকে মালামাল নেওয়ার সময় পুলিশের টিম ড্রাম ট্রাকগুলোর সামনে ছিল। কিন্তু লুটকারীদের সঙ্গে ট্রাকচালকদের হয়তো যোগাযোগ ছিল। ফলে মহাসড়কের পাশে মালামাল ফেলে দেয় লুটকারীরা। তবে সেগুলো লুট করতে পারেনি। সড়ক থেকে সরানোর জন্য হাইওয়ে পুলিশকে বলেছি। আশা করছি, এগুলো সরিয়ে ফেলা হবে।’

এ ব্যাপারে বিএসআরএম স্টিল কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মক্কা এন্টারপ্রাইজকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় কারখানা থেকে মালামাল ছাড় দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী কারখানা থেকে মালামাল বের করার পর ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে তার গোডাউনে নিয়ে যান। স্ক্র্যাপ নিয়ে মহাসড়কে ফেলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটনো কোনোভাবে কাম্য নয়। তা ছাড়া সিরাজুল ইসলামকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়নি। তিনি কেন মক্কা এন্টারপ্রাইজের গাড়িতে বাধা দিয়েছেন, তা আমি জানি না। সড়ক থেকে স্ক্র্যাপ সরানোর বিষয়ে মক্কা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।’

Source link

Related posts

২২ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

News Desk

লকডাউনে চলবে না ট্রেন

News Desk

ইটভাটার ধোঁয়া-গ্যাসে পুড়েছে ৫০ বিঘা জমির ধান

News Desk

Leave a Comment