টিফিনের টাকায় ১০০ জনকে খাবার খাইয়ে নববর্ষ উদযাপন ৩ শিশুর
বাংলাদেশ

টিফিনের টাকায় ১০০ জনকে খাবার খাইয়ে নববর্ষ উদযাপন ৩ শিশুর

ময়মনসিংহে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন মানবিক কাজ করে দেখিয়েছে তিন শিশু। অন্যদের মতো থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি, পটকা ফাটানো ও ফানুসের পেছনে টাকা খরচ না করে ১০০ প্রতিবন্ধীর খাবারের আয়োজন করেছে তারা। তাদের এমন মানবিক উদ্যোগে খুশি পরিবারের সদস্য ও সচেতন নাগরিক সমাজ।

এই তিন শিশু হলো- ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ফিজিক্যাল বিভাগের প্রধান ডা. মো. আজিজুর রহমানের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে রাইয়ান আজিজ, একই হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. মানবেন্দ্র ভট্টাচার্যের ছেলে চিন্ময় ভট্টাচার্য ও মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম রহমান ভূঁইয়ার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আরশান তানজিফ রেহাম।

তিন শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা তিন বন্ধু ২০২৪ সালে একটি মানবিক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রত্যেকের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে ক্লাবের নাম দেয় আরসিআর। বাবা-মায়ের দেওয়া টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ক্লাবের ফান্ডে রাখে তারা। সেই টাকায় এবার নববর্ষকে সামনে রেখে তিন বন্ধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের একবেলা খাবারের আয়োজন করে।

বুধবার (০১ জানুয়ারি) নগরের কাঁচিঝুলিতে প্রতিবন্ধী আত্ম উন্নয়ন সংস্থার ১০০ জনের দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খেয়েছে তারা।

আরসিআর ক্লাবের উদ্যোক্তা রাইয়ান আজিজ জানায়, ‘নববর্ষ আসলেই আমরা দেখতে পাই সমবয়সী বন্ধু এবং বড় ভাইয়েরা থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি, পটকা ফাটানো ও ফানুস উড়িয়ে টাকা খরচ করে। এটি তাদের জন্য ক্ষণিকের আনন্দ হলেও অন্যদের কষ্টের কারণ হয়। তাই তিন বন্ধু মিলে ভিন্নভাবে নববর্ষ উদযাপনের চিন্তা করি। সেই চিন্তা থেকেই প্রতিবন্ধীদের খাবারের আয়োজন করে নববর্ষ উদযাপন করেছি।’
 
প্রতিবন্ধী আত্ম উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আতাউর রহমান জুয়েল বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও পটকা না ফাটিয়ে এভাবেও আনন্দ উপভোগ করা যায়, সেটি করে দেখিয়েছে এই তিন শিশু। তাদের আয়োজন দেখে প্রতিবন্ধীরা খুশি হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যরাও এই জাতীয় উদ্যোগ নেবে বলে আশা করছি।’

ময়মনসিংহ জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমান সমাজব্যবস্থায় তিন শিশুর এমন মানবিক উদ্যোগ ব্যতিক্রম। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে যদি এমন মানবিকতা ফিরে আসে, তাহলে অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের দুঃখ-কষ্ট কমে আসবে। এই তিন শিশুর কাছে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই আছে।’

Source link

Related posts

তারাগঞ্জে সড়কে চলছে ফসল মাড়াই-দুর্ঘটনার আশঙ্কা

News Desk

জায়গা নেই হাসপাতালে, গাছতলায় ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা

News Desk

ঢাকায় গিয়ে টাকায় ভাসছেন নোমান, নেপথ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘অবদান’

News Desk

Leave a Comment